চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, আরামবাগ ও বাঁকুড়া মেডিক্যালে পরিষেবা লাটে
বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া ও আরামবাগ: আরজি করের ঘটনার জেরে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে এমনিতেই বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে পরিষেবায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তার উপর শনিবার ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের(আইএমএ) ডাকে কর্মবিরতি হওয়ায় পরিষেবা কার্যত লাটে ওঠে। বাঁকুড়া ও আরামবাগে এদিন একই ছবি লক্ষ্য করা গিয়েছে।
এদিন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোর শুনসান ছিল। এমনি সময়ে আউটডোরে দু’হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা করান। এদিন শ’খানেকও রোগীর দেখা পাওয়া যায়নি। অনেকে টিকিট কেটেও পরিষেবা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। আউটডোরের মেডিসিন সহ একাধিক বিভাগে সকাল থেকে তালা ঝোলানো ছিল। বেলা বাড়লেও সেই তালা খোলেনি। গুটিকয়েক চিকিৎসক অবশ্য আউটডোরে এদিন রোগী দেখেছেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ অবশ্য সচল ছিল। সেখানে দুই নার্সকে নিয়ে এক চিকিৎসক টানা রোগীদের পরিষেবা দিয়েছেন। কিছু রোগীর এদিন অস্ত্রোপচারও হয়েছে।
পুরুলিয়ার হুড়া ব্লকের বাসিন্দা রতিবালা গোপ বলেন, সপ্তাহখানেক আগে আমার বোনের যকৃতের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে তা স্থগিত হয়ে যায়। এদিন দুপুরে সেই অস্ত্রোপচার হয়।
হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় বলেন, এদিন চিকিৎসক সংগঠনের ডাকা ধর্মঘটে মিশ্র প্রভাব পড়েছে। মনসাপুজোর কারণে আউটডোরে এমনিতেই ভিড় কম ছিল। চিকিৎসক কম থাকলেও কোনও রোগীকে ফেরানো হয়নি। আউটডোরের কিছু রোগীকে জরুরি বিভাগে এনেও চিকিৎসা করানো হয়। ইনডোরে পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল।
এদিন আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোর বন্ধ ছিল। সেখানকার মূল গেটে তালা ঝোলানো হয়। এর জেরে অনেক রোগী ফিরে যান। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, জরুরি বিভাগে রোগীদের পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জরুরি বিভাগে দেখেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনেকে।
আরজি করের ঘটনায় দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে নতুন ওপিডি বিল্ডিংয়ের সামনে বসে চিকিৎসক, মেডিক্যাল পড়ুয়া, নার্স সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা অবস্থান বিক্ষোভ করেন। আইএমএ’র আরামবাগ শাখার সম্পাদক অশোক নন্দী বলেন, গরিব মানুষের কষ্ট হবে আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু আমরাও মানুষকে আমাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানাতে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা চাই, সমস্ত কর্মক্ষেত্রে নারীরা সুরক্ষিত থাকুন। সেজন্যই এদিন দেশজুড়ে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও আউটডোরে কর্মবিরতি পালিত হয়।
আরামবাগ মেডিক্যালের এক শিশু বিশেষজ্ঞ অবশ্য বলেন, এদিন আউটডোরে রোগীর সংখ্যা কমই ছিল। তবে যাঁদের জরুরি চিকিৎসার দরকার ছিল, তাঁদের দেখা হয়েছে।