• দত্তবাড়ির মনসাপুজো ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: নবদ্বীপের প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম প্রতাপনগর পালবাজার মাথাপুর রোডের দত্ত বাড়ির মনসাপুজো। মা মনসার স্বপ্নাদেশে এই পুজোর শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায়।  শতাধিক বছর আগে এই পুজো শুরু হয়। দত্ত পরিবার প্রায় ৪৫ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নবদ্বীপে চলে আসে। তারপর থেকে নবদ্বীপের বাড়িতে ছোট করে পুজো শুরু হয়। বছর ২৬ ধরে নবদ্বীপ প্রতাপনগরের বাড়িতে বড় মূর্তি করে পুজো করা হচ্ছে বলে জানান স্বর্ণ ব্যবসায়ী চণ্ডীচরণ দত্ত। তিনি বলেন, আমার দাদার একটা কঠিন রোগ হয়। বহু চিকিৎসককে দেখিয়েও রোগ সারেনি। এরপর হঠাৎই একদিন আমার বাবা তারাপদ দত্তকে মা মনসা স্বপ্নে দেখা দেন। স্বপ্নাদেশে দেবী বলেন, বাড়িতে মন্দির করে পুজো শুরু কর, তোদের সবার মঙ্গল হবে। এরপর বাড়িতে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে মূর্তি পুজো শুরু করা হয়। তারপর থেকে প্রতিবছরই পুরনো প্রতিমা ভাগীরথীতে সাত পাক ঘুরিয়ে বিসর্জন দিয়ে নতুন প্রতিমা মণ্ডপে আনা হয়। সারা বছরই সেই প্রতিমার নিত্য পুজো চলে। পুজোর দিন দেবীকে খিচুড়ি পুষ্পান্ন, আলুর দম, লুচি, মালপোয়া, মিষ্টান্ন, পরমান্ন, ঘরের তৈরি নাড়ু মোয়া ভোগ দেওয়া হয়। পুজোর পর প্রায় চার হাজার মানুষ প্রসাদ পান। বাড়ির পুজো হলেও এই পুজো ঘিরে আনন্দে মেতে ওঠেন পাড়া প্রতিবেশীরা। দত্ত বাড়ির গৃহকর্ত্রী কাকলি দত্ত বলেন, সারা বছরই আমরা এই পুজোর জন্য অপেক্ষা করে থাকি। পুজোর তিন দিন আমরা বিভিন্ন রকম আয়োজনে ব্যস্ত হই। পুজোর দিন যেমন ভোগ রান্না করি, তেমনই কয়েকদিন আগে থেকে নিজে হাতে ঠাকুরের জন্য নাড়ু-মোয়া তৈরি করি।

    দত্তবাড়ির পুত্রবধূ বান্টি দত্ত বলেন, বাড়ির মহিলারা সকলে মিলে উপবাসে সকাল থেকে মায়ের পুজোর আয়োজন করি। আমাদের বাড়িতে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহকারে সন্ধ্যা আরতি দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। সারা বছর এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। শুধু দত্তবাড়ি নয়, ওই এলাকাজুড়ে ঘরে ঘরে সর্পদেবী মা মনসার পুজো হয়। নবদ্বীপ প্রাণগোপাল নগরের আদি অগ্রগামী ক্লাবের মনসা পুজোকে কেন্দ্র করে পুজোর পরের দিন ক্লাবের মাঠে বিরাট মেলা বসে। এখানে এলাকার বেশ কয়েকটি প্রতিমা এখানে নিয়ে আসা হয়। প্রতিমা দর্শনের সুযোগ পান স্থানীয় মানুষজন। • নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)