সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ফের ভেঙে পড়ল রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের নলহাটির গম্ভীরা সেতুর ঢালাইয়ের একাংশ। বেরিয়ে পড়েছে লোহার রড। যার জেরে শনিবার থেকে ব্রিজের উপরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেছে প্রশাসন। এর আগে চারবার একইভাবে সেতুর অংশ ভেঙে যায়। বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন অনেকে। অথচ সেতু সংস্কারে কোনও হেলদোল নেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। ফের তাপ্পি দিয়ে সেতু মেরামতের কাজ শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬০ সালে গম্ভীরা কাঁদরের উপর ৬৬ মিটার দীর্ঘ এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানা ও বীরভূম জেলার নলহাটি থানা সীমানার মাঝে এই সেতুটি উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। সেতুটির উপরের ঢালাইয়ের অংশ দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। জাতীয় সড়ক সংস্কার করা হলেও এতদিন সেতুটির সংস্কার হয়নি। এরই মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে ভারী যানবাহন থেকে যাত্রীবোঝাই বাস। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতুর উপরে পুলিসের তোলাবাজির কারণেই ভারী ভারী ট্রাক দাঁড়িয়ে যায়। তাতে সেতুর হাল দ্রুত খারাপ হয়েছে। পুলিস অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
২০১৯ সালে ডিসেম্বরে সেতুটির একপাশের ঢালাই ভেঙে ঢালাইয়ের রড বেরিয়ে পড়ে। সেই সময়ও ১৫ দিন যান চলাচল বন্ধ রেখে ভাঙা অংশ সংস্কার করে প্রশাসন। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ২০২০ সালের জুন মাসে ফের একই জায়গায় ঢালাই খসে শিক ভেঙে পড়তে শুরু করে। ২০২৩ সালের জুন মাসে একইভাবে ঢালাইয়ের বড় অংশ ভেঙে রড বেরিয়ে পড়ে। ফের একবছরের মাথায় একই অবস্থা হয়েছে সেতুটির। মাঝখানের একাংশের ঢালাই ভেঙে শিক বেরিয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যাত্রী বোঝাই বাস ও অন্যান্য যানবাহন। এদিন বিষয়টি প্রথম নজরে আসে লোহাপুর ফাঁড়ির পুলিসের। তারা গাছের ডালাপালা ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের উপর ফেলে দেয়। যাতে যানবাহনের চালকরা বুঝতে পারে ওই অংশে বিপদ রয়েছে। এরপরই ব্রিজে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে প্রশাসন। যার জেরে সমস্যায় পড়েন বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা। জানা গিয়েছে, ব্রিজের ওই অংশে ওয়ান ওয়ে করা হয়েছে। যার জেরে ব্যাপক যানজটের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। চালকরা বলেন, ব্রিজের অংশ ভেঙে পড়ার বিষয়টি যদি নলহাটিতে জানানোর কোনও ব্যবস্থা করত প্রশাসন, তাহলে মুরারই মুর্শিাদাবাদের উমরপুর হয়ে উত্তরবঙ্গে চলে যাওয়া যেত। নলহাটি থেকে ২০ কিমি পর্যন্ত গাড়ি নিয়ে আসতাম না। জাতীয় সড়কের নির্বাহী বাস্তুকার জয়ন্ত গড়াই বলেন, ৬০ বছরেরও বেশি পুরনো সেতুটির হাল খারাপ। এর আগে তিন-চারবার সেতুটির অংশ ভেঙে পড়েছে। ওই জায়গায় নতুন করে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আজ, রবিবার থেকে আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের কাজ করা হবে।