• ঝাড়গ্ৰামে হাতির হানায় আবার মৃত্যু, বনদপ্তরের ভূমিকায় প্রশ্ন 
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্ৰামে হাতির হানায় ফের এক ব্যক্তির মৃত্যু হল। মৃতের নাম চাঁদ খিলারি(৪৫)। শনিবার সকালে ঝাড়গ্ৰাম ডিভিশনের বাঁদরভোলা বিটের পসরো গ্ৰামে একটি হাতি তাঁকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। পা দিয়ে কোমর পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার হাতির হানায় পুরসভার বিদ্যাসাগরপল্লির এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছিল। হাতির হানায় পরপর দু’জনের মৃত্যু ঘিরে চরম আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বনদপ্তর ও পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুক্রবার রাতে ঝাড়গ্ৰাম ডিভিশনের বাঁদরভোলা বিটে হাতির একটা দল ঢোকে। শনিবার ভোর ৪টের সময় পাঁচটি হাতি পসরো গ্ৰামে ঢুকে একের পর এক বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করে। হাতির দল গ্ৰামের ঢোকার খবরে ভোররাতে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। চাঁদবাবু নিজেদের দোকান ভাঙচুরের খবর পেয়ে বড় ছেলেকে নিয়ে ভোরেই দোকানে আসেন। সেইসময় হাতির দলটি দোকান ভাঙচুর চালিয়ে গ্ৰামের অন্যদিকে চলে যায়। ছেলেকে দোকানের কাছে রেখে একা বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় গ্ৰামের পথে হাতির দলের সামনে পড়ে যান। একটি হাতি তাঁকে শুঁড়ে তুলে আছড় মারে। পা দিয়ে কোমর পিষে দেয়। বাসিন্দারা কিছুক্ষণ পর দেহটি রাস্তার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখেন। ঝাড়গ্ৰাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    মৃতের ভাই জিতেন খিলারি বলেন, এদিন ভোর ৪টে নাগাদ পাঁচটি হাতি গ্ৰামে ঢোকে। চারিদিকে চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছিল। হাতির ভয়ে গ্ৰামের বাসিন্দারা বাড়ি থেকে বের হন। দোকান ভাঙচুরের খবর পেয়ে  দাদা ভাইপোকে নিয়ে দোকানে গিয়েছিল। খাবারের দোকানটা ভাইপো চালায়। হাতির দলটি অন্যদিকে চলে যাওয়ায় দাদা একাই বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় একটি হাতি শুঁড়ে তুলে আছড়ে মেরে পা দিয়ে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই দাদার মৃত্যু হয়। হাতির হানার ভয় নিয়ে আমাদের জীবন কাটছে। হাতির হানায় শেষ পর্যন্ত দাদাকে হারালাম। দাদার স্ত্রী, দুই ছেলে ও একটা মেয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়ল। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার শিলদার মালাবতী জঙ্গল থেকে পাঁচটি হাতি শহরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। হাতির হানায় শহরের এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছিল। এদিন পসরো গ্ৰামে ফের হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনায় বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঝাড়গ্ৰামের ডিএফও উমর ইমামকে এনিয়ে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, মানুষের জীবন ফিরিয়ে দিতে পারব না। কিন্তু, আমরা চেষ্টা করছি বনের পশুদের সঙ্গে মানুষও যেন ভালো থাকে। হাতির হানা থামাতে বনদপ্তর যথেষ্ট কাজ করছে। মানুষকেও আরও সচেতন হতে হবে। গত বৃহস্পতিবার হাতির দলকে ঘিরে শহরে জমায়েত হয়ে গিয়েছিল। ভিড় থেকে হাতিগুলিকে বের করা যাচ্ছিল না। বনদপ্তরের বারবার আবেদন সত্ত্বেও সেই ভিড় সরানো যায়নি। যার জেরে দুর্ঘটনা ঘটে। একটা হাতিকেও আমরা গত শুক্রবার হারিয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)