• হলদিয়া হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে সুপারের কাজকর্মে ক্ষোভ
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: শনিবার হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিটে এসে সুপারের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। হাসপাতালের কাজকর্মে নজরদারির জন্য চার সদস্যের একটি কোর কমিটিকে তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন। নীলাঞ্জন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ওই কমিটি কাজ করবে। এর ফলে হাসপাতাল সুপারের দায়িত্ব অনেকটা খর্ব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, হাসপাতাল সুপার সুভাষচন্দ্র মাহাত খাতায় কলমে দায়িত্বে থাকলেও কোর কমিটির কনভেনর নীলাঞ্জনবাবুই কার্যত হাসপাতালের দায়িত্ব সামলাবেন।

    বছর দেড়েক আগে জেলাশাসকের নির্দেশে কোর কমিটি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, অভিযোগ ওঠে সুপার ওই কমিটিকে সহযোগিতা করতেন না। এদিন সেই অভিযোগ জানার পর জেলাশাসক আরও কড়া পদক্ষেপ করেন। সেইসঙ্গে ডাক্তারদের নিয়মিত পারফরম্যান্স অডিটের নির্দেশ দেন। ওই অডিট রিপোর্ট স্বাস্থ্যদপ্তরের পাশাপাশি জেলাশাসকের দপ্তরেও পাঠাতে হবে। হাসপাতালের করোনা ভ্যাকসিন বিক্রির অভিযোগ নিয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন জেলাশাসক।

    সিএমওএইচ বিভাস রায় অবশ্য বলেন, সুপারের ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি। তাঁকে সাহায্য করার জন্য একটি কমিটি ছিল। জেলাশাসক সেই কমিটিকে সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

    এদিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ জেলাশাসক মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়। মহকুমা হাসপাতালের পুরনো ভবন ভেঙে পড়েছে। তাই হাসপাতালের একাংশ পাশেই নতুন কোভিড হাসপাতাল ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে। নতুন হাসপাতাল চত্বরজুড়ে পানের পিক, গুটকা, থুতু দেখে জেলাশাসক ক্ষুব্ধ হন। এরপর তিনি টিকিট কাউন্টার থেকে রোগী ও প্রসূতিদের নম্বর নিয়ে তাঁদের বাড়িতে সরাসরি ফোন করে খবর নেন। কী কারণে রোগীকে ডিসচার্জ করা হয়েছে, হাসপাতাল থেকে ছুটির পর কোনও নার্সিংহোমে ভর্তি হতে হয়েছে কি না-সেসব জানতে চান।

    এক রোগীর পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ ১১ বছরের এক বালিকার ঠিকমতো চিকিৎসা না করেই তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। হলদিয়ার টাউনশিপের ওই বালিকার গলায় মাছের কাঁটা বিঁধেছিল। ইএনটি স্পেশালিস্টকে অনকলে ডাকার আবেদনে সাড়া দেওয়া হয়নি। পরে হলদিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বালিকার চিকিৎসা হয়। জেলাশাসক এখবর জানার পরই তদন্তের নির্দেশ দেন।

    জেলাশাসক বলেন, সাতদিনের মধ্যে হাসপাতাল নিয়ে পরিচ্ছন্নতার রিপোর্ট দিতে বলেছি। হাসপাতালে কেউ খৈনি, গুটকা, পানমশলা নিয়ে ঢুকতে পারবে না। এজন্য গেটে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। রোগীর আত্মীয়দের জন্য পুরসভাকে হাসপাতালের সামনে শেড তৈরি করে দিতে বলেছি। দোতলা ও তিনতলার ওয়ার্ডে এসি লাগাতে বলা হয়েছে। চারতলায় নতুন ওয়ার্ড তৈরির নির্দেশও দিয়েছি। হলদিয়া পুরসভা একাজ করবে। এদিন জেলাশাসক হলদিয়ার পুরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে তাদের কাজের প্রশংসা করেন।

    হাসপাতালের সুপার বলেন, জেলাশাসক যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেই কাজ তাড়াতাড়ি করা হবে। ক্ষমতা খর্ব করার বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।
  • Link to this news (বর্তমান)