• সন্দীপকে ফের দিনভর জেরা, ষড়যন্ত্র খুঁজছে সিবিআই 
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শুক্রবার রাত ৩টে। টানা দশ ঘণ্টা জেরা শেষে সিবিআই দপ্তর থেকে বেরিয়েছিলেন আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আবার শনিবার বেলা দশটা। এজেন্সির নোটিস মেনে তাঁকে ফের পৌঁছে যেতে হল সিজিও কমপ্লেক্সে। প্রায় ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর, রাত এগারোটা নাগাদ বের হন তিনি। সিবিআই সূত্রে খবর, আজ, রবিবার কিছু নথি নিয়ে ফের সন্দীপ ঘোষকে আসতে বলা হয়েছে। তরুণী চিকিসককে ধর্ষণ-খুনে তাঁর ভূমিকা কতটা? ঘটনাস্থলে সঞ্জয় কি একাই ছিল? মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়ের সঙ্গে সন্দীপবাবুর যোগাযোগ কতটা? আর কোনও ষড়যন্ত্র আর জি কর কাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে কি? এইসব প্রশ্নের উত্তরই এখন খুঁজছে সিবিআই। সে জন্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সহ হাসপাতালের অন্য চিকিৎসক ও পড়ুয়াদের জেরা করতে চাইছেন আধিকারিকরা। আজ, রবিবার ডেকে পাঠানো হয়েছে নিহত চিকিৎসকের গাড়িচালককেও।

    তরুণীর মা অভিযোগ করেছেন, তাঁর মেয়েকে কর্মক্ষেত্রে নানাবিধ চাপ দেওয়া হচ্ছিল। সেই তদন্ত কলকাতা পুলিসও শুরু করেছিল। একই ফর্মুলায় এগচ্ছে এজেন্সিও। তাই চেষ্টা চলছে শিকড়ে যাওয়ার। ঘটনার দিন হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও অন্য কর্মীদের রোস্টারের পাশাপাশি শেষ তিন মাসের ডিউটি চার্ট বিশ্লেষণ করতে চাইছেন তারা। দেখতে চাইছেন, কারা বেশিরভাগ সময় ওই মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে ডিউটি করতেন। তাঁদের থেকেই ভিতরের খবর বেরতে পারে। ইঙ্গিত মিলতে পারে ‘ষড়যন্ত্রে’র। ওই তরুণীর সঙ্গে প্রায় নিয়মিত যাঁরা ডিউটি করতেন, তাঁদের মধ্যে কেউ তরুণীকে ভয় দেখাচ্ছিলেন কি না, তারও খোঁজ চলছে। ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষেরও। তাই সন্দীপবাবুকে জেরা চালিয়ে যাচ্ছেন আধিকারিকরা। প্রাক্তন অধ্যক্ষের কাছে বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁরা জানতে চান, মৃতার সঙ্গে কার কার ঘনিষ্ঠতা ছিল? সন্দীপবাবু স্পষ্ট জানান, কলেজে অনেক ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তাই কার সঙ্গে কার ভালো সম্পর্ক, সেটা জানা সম্ভব নয়। এরপরই তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় তরুণী চিকিৎসককে কোন ধরনের ডিউটি বেশি দেওয়া হতো? হাসপাতালের ওই কর্তার বক্তব্য, রোস্টার তৈরির দায়িত্ব তাঁর ছিল না। এরপরই তাঁকে শনিবার রোস্টার সহ আসতে বলা হয়। এদিন তদন্তকারীরা আরও জানতে চান, সঞ্জয় রায় কীভাবে সেমিনার হলে ঢুকল? হাসপাতালে তাঁর অবাধ গতিবিধির কারণই বা কী? সূত্রের খবর, সন্দীপবাবু জানিয়েছেন সঞ্জয়কে তিনি চেনেন না। আর সেমিনার হলে সে ঢুকল কীভাবে, তা নিরাপত্তারক্ষীরা বলতে পারবেন। সিবিআই অবশ্য এতে সন্তুষ্ট নয়। তাই ওইদিন ভোর ৪টে থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত সন্দীপবাবুর কল রেকর্ডস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তালিকায় সঞ্জয় আছে কি না, সেটা দেখাও অন্যতম উদ্দেশ্য। ঘটনাস্থলে সঞ্জয় ছা‌ড়া অন্য কেউ উপস্থিত ছিলেন কি না, তা জানতে হাসপাতালের টাওয়ার ডাম্প নেওয়া হচ্ছে। সন্দীপবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হচ্ছে মনোরোগ বিশেষজ্ঞকেও। 
  • Link to this news (বর্তমান)