• কর্মবিরতি চলছে, শহরের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল শুনশান
    বর্তমান | ১৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শনিবার কলকাতার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে কার্যত বনধের চেহারা। এসএসকেএম, এনআরএস, আর জি কর, বি সি রায়, মেডিক্যাল কলেজ একেবারে শুনশান। রাজ্যের বেশিরভাগ রোগী চিকিত্সা হবে না জেনে গিয়েছিলেন। ফলে কর্মবিরতির দিন হাসপাতালের দিকে পা বাড়ালেন না অসংখ্য রোগী। শহরের সমস্ত বড় হাসপাতালেরই ওপিডি বন্ধ ছিল এদিন। যাঁদের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ সেরকম রোগীই দৌড়লেন ইমার্জেন্সির উদ্দেশে। জরুরি বিভাগ সচল থাকলেও অনেক জায়গাতেই চিকিত্সকের উপস্থিতি ছিল হাতেগোনা।

    শনিবার ফুলবাগানের বি সি রায় শিশু হাসপাতালে ওপিডি ছিল সম্পূর্ণ বন্ধ। কয়েকজন জরুরি বিভাগে এসেছিলেন। প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয় শিশুদের। কয়েকজনকে শুধুমাত্র ভর্তি করা হয়েছে। বরানগর থেকে এসেছিলেন মৌসুমী বিশ্বাস। তাঁর মেয়ের কানে ব্যথা। ওপিডি বন্ধ দেখে জরুরি বিভাগে ইএনটি স্পেশালিস্টের খোঁজ করছিলেন। খোঁজ করে কোনও খবর পেলেন না। অগত্যা স্থানীয় চিকিত্সকের শরণাপন্ন হতে রওনা দিলেন। বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকেও বলা হল, ওপিডি একেবারেই বন্ধ রয়েছে। কার্ডিওলজি বিভাগে একজন চিকিৎসক আছেন। তবে জরুরি বিভাগ খোলা। মেডিক্যাল কলেজেও ওপিডি বন্ধ। ঠাকুরপুকুর থেকে বহু কষ্ট করে হাসপাতালে এসেছিলেন বৃদ্ধা নাজমা বেগম। তিনি বললেন, ‘মাথা ঘুরছে। জরুরি বিভাগ থেকে বলল, সোমবার আসতে। জরুরি বিভাগ নাকি চালু আছে? কিন্তু চিকিৎসা তো পেলাম না।’ এসএসকেএম ও বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে অন্যান্য সময় ভিড়ের চাপে হাঁটাচলা করা যায় না। তবে শনিবার চত্বর ছিল কার্যত জনমানবহীন। একই চিত্র ছিল এনআরএসেও। সেখানে ওপিডি তো বন্ধই, রোগীর আত্মীদের অভিযোগ, জরুরি বিভাগে কর্মীসংখ্যাও ছিল কম। আলতাফ পুরকাইত এসেছিলেন স্ত্রীকে নিয়ে। তিনি জানান, শিয়ালদহ আসার পথে গোচরণ স্টেশনে স্ত্রীয়ের কান থেকে দুল ছিঁড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল এক দুষ্কৃতী। আহত স্ত্রীকে নিয়ে এনআরএসে এসেছেন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা করাতে পেরেছেন। কিন্তু সেখানে চিকিৎসক সংখ্যা কম থাকায় প্রবল হয়রানি পোহাতে হয়েছে। এর পাশাপাশি আর জি কর হাসপাতালেও বন্ধ ছিল ওপিডি। দমদম থেকে রঞ্জিত্ মল্লিক নামে এক ব্যক্তি এসেছিলেন মেয়েকে নিয়ে। তাঁর বক্তব্য, স্ত্রীরোগ বিভাগ থেকে জরুরি বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসা করাতে পেরেছেন। 

    অন্যদিকে এদিন নবান্নে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘আজ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ৪৩ চিকিৎসকের বদলি নিয়ে খবর বেরিয়েছে। আমাদের ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসে ৬০০০ চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁদের নিয়মিত বদলি ও পদোন্নতির কাজ চলে। এটা পুরোপুরি রুটিন একটি ব্যাপার। এই বদলি দু’মাস আগেই চালু হয়েছে। নানা কাজে অর্ডার বের করতে দেরি হয়। যাতে চিকিত্সা পরিষেবা ব্যাহত না হয় তাই আমরা এই বদলি প্রক্রিয়া এখন পুরোপুরি বাতিল করে দিলাম।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)