নন্দন দত্ত, সিউড়ি: সরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ড তোলপাড় ফেলে দিয়েছে গোটা দেশে। আর জি কর হাসপাতালের নিরাপত্তা ও ভিতরের একাধিক দুর্নীতি নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আর এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ হাতিয়ার করলেন সেসব দুর্নীতিকেই। শুধু তাইই নয়, ধরনামঞ্চে রীতিমতো বিস্ফোরক বক্তব্য রাখলেন তিনি। তাঁর কথায়, ”আর জি করে বাইরে থেকে মেয়ে এনে ফুর্তি করা হয়। ওখানে পর্নোগ্রাফির শুটিং হয়।” এহেন বক্তব্যের পালটা দিয়ে তৃণমূলের বক্তব্য, পর্নোগ্রাফির বিষয়টা বিজেপিই ভালো বলতে পারবে। তারা ওই সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে সিবিআই-কে জানান দিলীপ।
রবিবার বীরভূমের (Birbhum)আমোদপুরে আর জি কর ইস্যুতে ধরনা ছিল বিজেপির। মূল বক্তা হিসেবে ছিলেন দিলীপ ঘোষের। সেখান থেকেই আর জি করের (RG Kar Hospital) ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে ফেলেন তিনি। বলেন, ”আর জি করের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ একটা সমাজ বিরোধী। ওখানে একটা চক্র গড়ে তুলেছিলেন। বাইরে থেকে মেয়েদের এনে ফুর্তি করা হতো। ব্লু-ফিল্মের শুটিং হতো। যারা এসব জানতে পারত, তাদের হুমকি দেওয়া হতো। হয় এসবে যোগ দাও, নয়ত মেরে ফেলা হবে। এভাবেই ওখানে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। ওখানে কেন কেউ সুইসাইড (Suicide) করতে যাবে? ওটা কি সুইসাইড করার জায়গা? এসব কথা জেনে গিয়েছিলেন শান্তনু সেন। তিনি নিজেই বলেছেন, তাঁর মেয়েকেও এসবে জড়ানো হচ্ছিল। তাঁকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তিনি তো নেতার মেয়ে। তাই কোনওক্রমে বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু এই মেয়েটি তো সাধারণ, আমার-আপনার ঘরের মেয়ে। তাই তাঁর এই অবস্থা।”
শান্তনু সেনের অপসারণ নিয়েও মুখ খুলেছেন দিলীপ ঘোষ। (Dilip Ghosh) প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষ কীভাবে কী সুযোগ পেয়েছেন, তা নিয়েও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন দিলীপ। তাঁর কথায়, ”সন্দীপ ঘোষ ওখানে চক্র চালাচ্ছিলেন। তাঁকে উত্তরবঙ্গে বদলি করা হলেও ২৮ দিনের মাথায় ফিরে আসেন।” দিলীপের এসব মন্তব্যের পালটা দিতে অবশ্য ছাড়েনি তৃণমূল (TMC)। দলের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ”পর্নোগ্রাফির ব্যাপারটা দিলীপবাবুরা ভালো জানবেন। কারণ, ত্রিপুরা (Tripura) বিধানসভার মধ্যে তাঁদেরই বিধায়ক বসে বসে মোবাইলে পর্নোগ্রাফি দেখছিলেন, তা জানাজানিও হয়। আর তাঁদের দলের নেতা তথাগত রায় তো বলেছেন, বিজেপি কামিনী-কাঞ্চনের দল। তো এমন দলের নেতাই পর্নোগ্রাফি নিয়ে ভালো বলতে পারবেন। আমাদের তেমন ধারণা নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, দিলীপবাবুর এনিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে, তিনি সিবিআই-কে বলুন।”