অর্ণব দাস, বারাকপুর: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক খুন নিয়ে অযথা বিরোধীরা রাজনীতি করছে বলেই অভিযোগ রাজ্যের শাসক শিবিরের। ‘মহিলাদের রাত দখলের’ রাতে তাণ্ডবের নেপথ্যেও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রই দেখছে ঘাসফুল শিবির। সেই একই অভিযোগের সুর এবার শোনা গেল কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের গলায়।
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বেলঘরিয়ার বাটার মোড়ে মিছিল করে তৃণমূল। তাতে শামিল হন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। মিছিল থেকে বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, “ডাক্তারি ছাত্ররা নিষ্পাপ ফুলের মতো। হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী রাস্তায় নামল। তাঁরা জানেনও না রাম-বাম আর শ্যাম ছাত্রদের কাঁধে বন্দুক রেখে তাণ্ডব চালিয়ে গেল আর জি করে। সেখানে তোমার বোন, ভাইরা রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা শুধু সুবিচারই নয়। আমরা দোষীর ফাঁসি চাই। তবে ফাঁকতালে যারা পান খেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সেই রাম-বাম-শ্যামের বিরুদ্ধে আমরা।”
উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নাইট ডিউটি ছিল তরুণী চিকিৎসকের। রাতে নৃশংস অত্যাচারের শিকার হন তিনি। মৃত্যুও হয়। পরদিন সকালে সেমিনার হল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। সেই সময় প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় ছিলেন তিনি। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার প্রায় গোটা দেশ। চতুর্দিকে ওঠে আন্দোলনের ঝড়। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গত ১৪ আগস্ট ‘রাত দখল’ কর্মসূচিতে অংশ নেন মহিলারা। অভিযোগ, ওই রাতেই আর জি করে ঢুকে তাণ্ডব চালায় বহিরাগতরা। এই ঘটনায় ভেঙে তছনছ হয়ে যায় হাসপাতাল। জখম হন আন্দোলনরত চিকিৎসক ও পুলিশকর্মীরা। জরুরি বিভাগ, ওষুধের স্টোররুম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এই ঘটনা নিয়ে শুক্রবারই সাংবাদিক বৈঠক করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। শুরুতেই দুটি ভিডিও দেখান। একটি ১ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের এবং অপর ভিডিওটি ১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের। কীভাবে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বহিরাগতরা ঢুকে পড়লেন, তা ওই ভিডিও দুটির মাধ্যমে দেখানো হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা ‘ব্যর্থতা’র অভিযোগে কার্যত দায় স্বীকার করে নেন সিপি। তিনি বলেন, “আরজি করের সামনে আন্দোলন যে আচমকা হিংসাত্মক হয়ে উঠবে, ভাবতে পারিনি। আমাদের ভাবনায় ভুল ছিল। একে আমাদের ব্যর্থতা বললে বলতে পারেন।”