মনসাপুজোয় উৎসবে লটারি কেটে কেউ পেলেন ছাগল, কারও জুটল হাঁস
এই সময় | ১৯ আগস্ট ২০২৪
সঞ্চিতা মুখোপাধ্যায়, পুরুলিয়া
লটারিতে লক্ষ তো দূরের কথা, কোটি টাকার পুরস্কার হামেশাই দেখতে পাওয়া যায়। তবে এই লটারির রীতি আলাদা আর তার পুরস্কারও অভিনব। রীতিমতো লোভনীয় অন্তত মনসাপুজোর সময়ে গ্রাহকদের কাছে তো বটেই। এই লটারি খেলা হয় শুধু সর্পদেবীর আগমন উপলক্ষেই। পুরুলিয়া শহরের গাড়িখানার কাছেই দর্জিপাড়া। এখানেই লটারির টিকিট কিনতে ভিড় জমিয়েছেন মানুষ।লটারির প্রথম পুরস্কার একটি ২৫ কেজি ওজনের নধর পাঁঠা। চমক রয়েছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের ক্ষেত্রেও। ১০ জন পাবেন দ্বিতীয় পুরস্কার। ১০টি ৫ কেজি ওজনের ছাগল। তৃতীয় পুরস্কার আবার ১০ জনকে ৩টি করে হাঁস। চতুর্থ পুরস্কার ১০ জনকে ২টি করে হাঁস। রয়েছে ১০০টি পঞ্চম পুরস্কার। সেখানে ওই একশো জন পাবেন একটি করে হাঁস। টিকিটের দাম মাত্র ২০ টাকা।
তবে নামে লটারি হলেও একে ঠিক লটারি বলতে রাজি নন বিক্রেতা অনুপ ঘোষ। দর্জিপাড়া ষোলোয়ানা মনসাপুজো কমিটির পক্ষে গত ৪ বছর ধরে এই লটারি হয়ে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা একটা মজার খেলা। এখানে কোনও পুরস্কারমূল্য নেই। টিকিটের জন্য যা নেওয়া হয়, তার প্রায় পুরোটাই মন্দির ও পুজোর জন্য অনুদান হিসেবে ধরা থাকে। চাঁদার বদলে এখানে এই টিকিট কেনেন ভক্তরা।’
প্রায় ১০ হাজার টিকিট বিক্রি হয় বলে জানান তিনি। এলাকার বাসিন্দা পঙ্কজ ধীবরের বক্তব্য, ‘মনসাপুজোয় বলি দিতেই হবে। একটি করে হাঁস হলেও দিতে হবে। লটারিতে যদি হাঁস বা ছাগল পাওয়া যায় খুব ভালো হয়।’ এখান থেকে একাধিক বার হাঁস, ছাগল তিনি পেয়েছিলেন বলে জানান পঙ্কজ। লটারির ক্রেতা দিলীপ মাহাতো, সুমন বাউড়ি বলেন, ‘কার ভাগ্যে কী উঠল তা নিয়ে দারুণ মজা হয়। এই লটারি সবাই খুব উপভোগ করেন।’
রবিবার ছিল মনসাপুজোর পান্না (পুজো উদ্যাপন)। এই দিনে অনেকেই মানত করতে হাঁস বা ছাগল অর্পণ করেন। এ দিন দোকান, ব্যবসাও বন্ধ থাকে। ফলে উৎসবের দিনে বাড়তি উন্মাদনা তৈরি করে এই লটারি আর তার পুরস্কার। লটারির এক উদ্যোক্তা বলেন, ‘নাগাল্যান্ডের একটি নির্দিষ্ট লটারির নিয়ম এখানে ফলো করা হয়। শেষ ৪ সংখ্যার নম্বরের ভিত্তিতে খেলার পুরস্কার ঠিক করা হয়। ফলে সম্পূর্ণ ভাবে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।’