• 'ঋণ মেটাতে চেয়েছিল, বড় করে দুর্গাপুজো করবে ভেবেছিল', আক্ষেপ RG করের তরুণীর বাবা
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৯ আগস্ট ২০২৪
  • বাবা-মা, বন্ধু বা শিক্ষক সকলের মুখে একটাই কথা, সেটা হল আরজি করের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসক ছিলেন একজন যোদ্ধা। তাঁর স্বপ্ন ছিল স্বর্ণপদক বিজয়ী ডাক্তার হওয়ার। আর সেই সঙ্গে আর্থিকভাবে পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। পরিবারের যাবতীয় ঋণ মিটিয়ে বাবা-মায়ের কষ্ট দূর করা। আর সেই স্বপ্নই তাঁর শিক্ষা এবং জীবনের যাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিভীষিকাময় সেই ঘটনার জেরে নিমেষে শেষ হয়ে গেল একটি প্রাণ। 

    অনেক কষ্টে বড় করে তুলে মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন বাবা-মা। কিন্তু, এক রাতেই সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। নির্যাতিতার বাবা আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরা একটি দরিদ্র পরিবার এবং আমরা তাকে অনেক কষ্ট করে বড় করেছি। ও একজন ডাক্তার হওয়ার জন্য অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেছে। কিন্তু, আমাদের সব স্বপ্ন এক রাতেই ভেঙে গিয়েছে।’ 

    পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সমস্ত বাঙালি পরিবারের মতো নির্যাতিতাও অধীর আগ্রহে অক্টোবরে দুর্গাপুজোর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কারণ নির্যাতিতা ২০২১ সাল থেকে প্রতিবার বাড়িতে দুর্গাপুজোর আয়োজন করতেন। তবে এবার বড় করে পুজো করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কারণ তাঁর পড়া শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু, তা আর হল না। বাবা বলেন, ‘এখন আমরা যা চাই, তা হল ঘটনায় জড়িত সকল অপরাধীদের গ্রেফতার এবং উপযুক্ত শাস্তি। শুধুমাত্র এটিই তাঁর আত্মাকে শান্তি দিতে পারে।’

    পড়াশোনায় অত্যন্ত ভালো ছিলেন আরজি করে নির্যাতিতা। তিনি জেইই এবং মেডিক্যাল উভয়ই ক্র্যাক করেছিলেন। তিনি এমবিবিএস বেছে নিয়েছিলেন এবং দুটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে কোর্সের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। তিনি কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে বেছে নিয়েছিলেন। পিজি করার জন্য আরজি করকে বেছে নিয়েছিলেন। মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ এবং উচ্চমাধ্যমিকে ৮৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন। তাঁর মায়ের কথায়, ‘আমাদের একমাত্র সন্তানের জন্মের পর থেকে আমাদের জীবন শুধু তাঁকে ঘিরেই ছিল। ও আমাদের কাছে সবকিছু ছিল।’

    প্রতিবেশী বলেন, ‘তাঁর বাবা একজন দর্জি থেকে একজন পোশাক প্রস্তুতকারক হয়ে উঠেছেন। মেয়েটি খুবই মেধাবী ছাত্রী ছিল। তারা সম্প্রতি একটি নতুন গাড়ি কিনেছে। পুরানো বাড়িটিও ফিরে পেয়েছে।’ শুধু তাই নয়, নির্যাতিতা একজন পশুপ্রেমীও ছিলেন।

    তিনি পথ কুকুরদের খাওয়াতেন এবং উদ্ধার করে তাদের যত্ন করতেন। কোভিডের সময়ও তিনি রোগীদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। পারিবারিক সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন বিশ্রাম ছাড়াই ৩৬ ঘণ্টা ডিউটি করেছিলেন। 
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)