• বেহাল দশায় পুরুলিয়ার পশু চিকিৎসা কেন্দ্র, ফান্ডের অভাবে থমকে সংস্কার
    বর্তমান | ১৯ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: ঝোপজঙ্গলের মাঝে পুরুলিয়ার স্টেট অ্যানিম্যাল হেলথ সেন্টার যেন আস্ত একটা ভূতুড়ে বাড়ি। ছাদ দিয়ে অনবরত বৃষ্টির জল পড়ছে। জানালার কাঁচ ভাঙা। একদিকে আবার প্লাস্টিক টাঙানো। সেখানে জানালার অস্তিত্বই নেই। অধিকাংশ রুম দীর্ঘদিন তালা বন্ধ। এর মাঝেই কোনওক্রমে জোড়াতালি দিয়ে চিকিৎসা চলছে পশুপাখিদের। ওই পশু হাসপাতালের পুরনো শ্রী ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন জেলার পশুপ্রেমীরা। পুরুলিয়া শহরের দেশবন্ধু রোড এলাকায় একসময় জেলা পশু হাসপাতাল নামে পরিচিত পশু চিকিৎসা কেন্দ্রের এখন নাম স্টেট অ্যানিম্যাল হেলথ সেন্টার। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল ওই পশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র। জেলার পশুপ্রেমী থেকে শুরু করে অনেকেই ওই হাসপাতালে সংস্কারের বিষয়ে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের দাবি জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। ওই প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে মোট দুজন চিকিৎসক থাকার কথা। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে রয়েছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। ৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী থাকার কথা। কিন্তু রয়েছেন মাত্র দুজন। একজন নাইট গার্ড এবং একজন ফার্মাসিস্ট। দীর্ঘদিন ধরেই এই কর্মী সংকট। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইনডোর পরিষেবা না থাকলেও বেহাল অবস্থায় থাকা ভবনের আউটডোরে অসুস্থ পশুপাখিদের চিকিৎসা করা মুশকিল। পুরুলিয়া শহরের দেশবন্ধু রোড এলাকায় বেশ বড় জায়গা নিয়ে এক সময়ে এই পশু হাসপাতাল তৈরি হয়েছিল। সেখানে মূল ভবনের ছাদ থেকে অনবরত বৃষ্টির জল পড়ে। দেওয়ালে হাত গেলে মাঝে মাঝে ইলেকট্রিকের শক খেতে হয়। জানালার কাচগুলিও ভাঙ্গা। মেঝেতেও জল থৈ থৈ। চিকিৎসকের একটা টেবিল ও চেয়ার রয়েছে। সমস্ত জিনিসপত্রের উপরে প্লাস্টিক ঢাকা দেওয়া। অপর একটি রুমের অবস্থাও প্রায় একই রকম। বাকি রুমগুলি দীর্ঘদিন তালা বন্ধ। রুমের ভেতরেই বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম পড়ে রয়েছে। মূল ভবনের বাইরে প্রায় সমস্ত ভবনই ঝোপজঙ্গলে ভর্তি। ওই প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্র সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অনেকেই ওই জায়গাতে কার্যত ফাঁকা মাঠের শৌচ করার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করেন। অন্ধকার নামলে মদের আসর বসে বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংস্কারের জন্য প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা ডিপিআর তৈরি করে দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। তারপরে সংস্কারের কাজ আর কিছু এগয়নি। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের  চিকিৎসক তুহিনবরণ অধিকারী বলেন, আমার কিছু বলার এক্তিয়ার নেই। নিজেই যা দেখার দেখে নিন। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ সুমিতা সিং মল্ল বলেন, এ বিষয়ে আগেও একবার জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিতে আলোচনা হয়েছিল। সত্যিই স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে দপ্তরের সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল। আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, তাঁদের দপ্তরে ফান্ড নেই। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ফের স্থায়ী সমিতিতে বৈঠক করে এ বিষয়ে মন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। অন্যদিকে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকেও যেটুকু সম্ভব সেই সংস্কার কাজ করার ব্যবস্থা করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)