করিমপুরে বেগুন ও পটলের অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধিতে ক্ষোভ
বর্তমান | ১৯ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা, করিমপুর: ১৫ দিনের মধ্যে বেগুন ও পটলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছে। আবহাওয়ার কারণে বেগুনে রোগ লাগায় এবং পটলের উৎপাদন কমে যাওয়ায় এই দাম বৃদ্ধি বলে চাষিরা জানিয়েছেন। দু’সপ্তাহ আগে যে বেগুনের পাইকারি দাম ১০ টাকায় নেমেছিল, এখন সেই বেগুনের দাম ১০০ টাকা। ১৫ টাকা কেজির পটল বিকচ্ছে ২২ টাকায়।
হোগলবেড়িয়ার রামনগরের চাষি বিমান প্রামাণিক বলেন, এবছর মরশুমের প্রথম দিকে বৃষ্টি না হওয়ায় সব্জি চাষে সমস্যা হয়। একমাস আগে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে বেগুন ও পটলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। প্রায় ১০০ টাকা কেজি দরের বেগুনের দাম ১০-১৫ টাকায় চলে এসেছিল। কিন্তু, গত এক সপ্তাহে আবহাওয়ার কারণে বেগুন গাছে রোগপোকা দেখা দেয়। গাছের বেগুন পচতে শুরু করছে। ফলে যে জমিতে আগে এক কুইন্টাল বেগুন তোলা হতো এখন সেই জমিতে ১০ কেজি বেগুন ফলছে না। স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়েছে।
মানিকনগরের চাষি উত্তম মণ্ডল বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে এবছর সব্জির উৎপাদন না হওয়ায় চাষিরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিল। কিছুদিন আগে বৃষ্টি হওয়ায় বেশি উৎপাদন হচ্ছিল এবং সবজির দাম কমেছিল। আবহাওয়ার কারণে পচন ধরায় বেগুনের ফলন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি পটলের উৎপাদনও কমে গিয়েছে। জমির উৎপাদিত সব্জির ফলন কমে যাওয়ায় চরম ক্ষতির সম্মুখীন এলাকার চাষিরা।
মেঘনার এক চাষি জানান, চৈত্র-বৈশাখ মাসে বেগুন চারা লাগানো হয়। এবার মূলত সেচের জলে বেগুন চাষ করতে হচ্ছে। বেগুন চাষ করতে রাসায়নিক সার ও প্রচুর কীটনাশক প্রয়োজন। যে কারণে অন্য চাষের তুলনায় বেগুন চাষে কয়েক গুণ বেশি খরচ করতে হয়। এখন এই অজানা রোগের ফলে বেগুনের গাছ ও গাছের বেগুন উভয়ই পচে যাচ্ছে। রোগ না লাগলে শীতকাল পর্যন্ত গাছে বেগুন হতো।
রাজাপুরের পাইকারি সব্জি ব্যবসায়ী পরিতোষ সরকার বলেন, এই বাজার থেকে প্রতিদিন সব্জি বোঝাই প্রায় ১০টি ট্রাক দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানা সহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়। মাস দেড়েক আগে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ টন পটল এবং ৩০০ কুইন্টাল বেগুন পাঠানো হতো। পটলের পাইকারি দাম ছিল ১০ থেকে ১৫ টাকা, আর বেগুনের দাম কমতে কমতে ১০ টাকা কেজিতে এসে ঠেকেছিল। আচমকা উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে আমদানি কমে গিয়েছে। তাই সব্জির দাম বেড়ে গিয়েছে। এখন প্রতিদিন মাত্র ৪০ টন পটল এবং ৩০ কুইন্টাল বেগুন বাইরে যাচ্ছে।