• নবদ্বীপের বাজারে এবার হটকেক ব্রেসলেট স্টোন ও মেটালের রাখি
    বর্তমান | ১৯ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: সুতো আর উলের বাহারি রাখি নয়, এবার নবদ্বীপে ব্রেসলেট স্টোন আর মেটালের রাখির চাহিদা তুঙ্গে। পাশাপাশি চাহিদা রয়েছে ছোটদের কার্টুন, লাইটিং রাখির। দাম বাড়লেও ফুলের রাখির চাহিদা রয়েছে আগাগোড়া। সোমবার রাখি পূর্ণিমা। তাই রবিবার দুপুর থেকেই একশ্রেণির মানুষ ফুলের রাখি কিনতে শুরু করেছেন মঠ মন্দির ও গৃহস্থ বাড়ির বিগ্রহের জন্য। কয়েকদিন ধরে নবদ্বীপের প্রাণকেন্দ্র পোড়ামাতলা, ঢপওয়ালির মোড়, রাধাবাজার সহ বিভিন্ন পাড়ায় রাখি নিয়ে বসছেন অনেক ব্যবসায়ী। তবে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি আর মেঘলা আকাশ থাকায় চিন্তিত রাখি ব্যবসায়ীরা।

    প্রতি বছর রাখি পূর্ণিমায় রজনীগন্ধা, সূর্যমুখী, গোলাপ ঝাউপাতা দিয়ে তৈরি ফুলের রাখির চাহিদা ভালো থাকে। তবে এবছর তুলনামূলকভাবে ফুলের দাম অনেকটাই বেড়েছে। সেকারণে ফুলের রাখির দামও কিছুটা বেড়েছে। এর মধ্যে অনেকেই আবার তাঁদের দেবতাকে পরানোর জন্য ফুলের রাখি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ফুলের রাখির পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে ড্রাই রাখি, অর্থাৎ প্লাস্টিক ফুলের রাখিও। পূর্ণিমার কয়েকদিন আগে থেকেই স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলের কর্মীদের এই ড্রাই রাখি কিনতে দেখা গিয়েছে। 

    রবিবার সকাল থেকে নবদ্বীপ পোড়ামাতলায় দেখা গেল বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাখির দোকানগুলিতে রাখি কেনার ভিড়। দশম শ্রেণির ছাত্রী বান্টি দেবনাথ জানিয়েছে, ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। ওর পছন্দমতো কার্টুন রাখি নেবে। দাদাদের জন্য নতুন ডিজাইনের ব্রেসলেট, বিভিন্ন স্টোন ও মেটালের রাখি কিনেছি।

    রাধাবাজার তুড়াপাড়ার বাসিন্দা জয়ব্রত দাস বলেন, ছ’বছর ধরে আমি রাখির ব্যবসা করছি। বাজার ভালো হলেও বৃষ্টির জন্য ভয় পাচ্ছি। কিছু রাখি তো জল লেগে নষ্ট হয়ে গেল। বাচ্চাদের কার্টুনের রাখি ছোটা ভীম, ডোরেমন, টম অ্যান্ড জেরির পাশাপাশি লাইটিং দেওয়া রাখির বিক্রি ভালো। বুড়ো শিবতলা ব্যানার্জিপাড়ার দীপঙ্কর সরকার ও পোড়াঘাটের বাসিন্দা অপু সাহা বলেন, এবছর মূলত ব্রেসলেটের রাখির চাহিদা খুব বেশি। বিভিন্ন ডিজাইনের পাথর সেটিং করা এই রাখি বেশি বিক্রি হচ্ছে। ব্রেসলেটের উপর মেটালের রাখি চারিদিকে পুঁতির উপর মেটালের কাজ করা। এছাড়া স্বস্তিক চিহ্ন দেওয়া রাখিও আছে। পাঁচ টাকা থেকে ৬০ টাকা দামে সব রকম রাখি বিক্রি হচ্ছে।

    নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শ্রীবাসঅঙ্গন রোডের সৌরভ হালদার বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি সংসার চালাতে আট বছর ধরে রাখি বিক্রি করি। প্রতিবছরই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সদস্যরা সুতোর রাখি নেন। এছাড়া রয়েছে ফ্যান্সি রাখি ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং খুব কম দামের রাখি আড়াই টাকা থেকে পাঁচ টাকা।

    পোড়ামাতলার ফুল ব্যবসায়ী দীপেন্দু দে বলেন, অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে ফুলের দাম। রজনীগন্ধা ৩২০ টাকা কেজি, গোলাপ ৬৫০ টাকা, অল্প পরিমাণ ঝাউপাতা এক বান্ডিলের দাম ৫৫ টাকা। এছাড়া প্লাস্টিক ফুল দিয়ে যে রাখি তৈরি করা হচ্ছে, সেগুলো প্রতি পিস ১৫ টাকা। এই দিনে ফুলের রাখির চাহিদা খুব বেশি থাকে কারণ ঝুলন পূর্ণিমার শেষ দিনে মন্দিরের বিগ্রহকে ফুলের রাখির সাজে সাজিয়ে তোলা হয়। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)