• ‘আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন, আগে স্বাভাবিক হোক রোগী পরিষেবা’
    বর্তমান | ১৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘আর জি করে যা হয়েছে, তা জঘন্য। অপরাধীর শাস্তি আমরাও চাই। আন্দোলন চলুক। এই আন্দোলনে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু, রোগীদের অপরাধ কোথায়, একটু বলতে পারেন? সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না।’— রবিবার জরুরি বিভাগের সামনে কাতর কণ্ঠে পরিষেবা স্বাভাবিক করার আর্জি জানালেন বারুইপুরের অসীম মণ্ডল। স্ত্রী দেখাতে হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি। সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন খোদ রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরাই।

    আর জি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। এই পরিস্থিতিতে কলকাতায় গত আটদিন ধরে সবকটি সরকারি হাসপাতালে আউটডোর পরিষেবা ব্যাহত। বিচারের দাবিতে কাজ থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সিনিয়র চিকিৎসকরা বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তা সত্ত্বেও রোগী পরিষেবা তলানিতে এসে ঠেকেছে। ফিরে যাচ্ছেন হাজার হাজার রোগী। গত কয়েকদিনে সরকারি হাসপাতালে আশ্চর্যজনকভাবে কমে গিয়েছে রোগীর সংখ্যা। 

    রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, গোটা চত্বর একেবারে ফাঁকা। রবিবার আউটডোর স্বাভাবিক নিয়মেই বন্ধ। তা সত্ত্বেও অন্যান্য রবিবারের তুলনায় ছিঁটেফোটা ভিড় ছিল না। রোগীর পরিজনদের বক্তব্য, চিকিৎসার কারণে প্রায়ই মেডিক্যাল কলেজে আসতে হয়। কিন্তু, কয়েকদিন ধরে যা চলছে, তা অমানবিক। হাসপাতাল জরুরি পরিষেবার জায়গা। সেখানে কর্মবিরতি কেন? মানতে পারছেন না রোগীরা। শুধু তাই নয়, ধীরে ধীরে সরকারি চিকিৎসকদের উপর আস্থা হারাতে বসেছেন তাঁরা। রাজা কর্মকার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ১২ দিন ধরে আমার এক আত্মীয় এখানে ভর্তি। কর্মবিরতির কারণে চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। শুধুমাত্র সিনিয়র ডাক্তাররা কাজ করায় ঠিক সময়ে চেক-আপ হচ্ছে না। মানুষ হাসপাতালে আসেন চিকিৎসার পাওয়ার জন্য। তাঁদের সেটাই কাজ। সেই পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে আন্দোলন করে কী লাভ? পিজি, এন আর এস, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, বাঙ্গুর হাসপাতালেও একই ছবি। সব জায়গাতেই ভোগান্তির ছবি। তবে এদিন থেকে হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান, বিক্ষোভের পাশে ব্যানার লাগাতে শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা সেখানে লিখেছেন, পরিষেবা চালু রয়েছে। ইমার্জেন্সি বিভাগে চিকিৎসকরা রয়েছেন। ঘটনার পর থেকে প্রাথমিকভাবে সেই ছবিটা দেখা যায়নি। সোমবার থেকে তাহলে কি অবস্থার পরিবর্তন হবে? সেটাই এখন প্রশ্ন।
  • Link to this news (বর্তমান)