• ধর্ষণ হয়েছে,মৃত্যুর আগে নৃশংস অত্যাচার, ময়নাতদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট সামনে এল
    আজ তক | ১৯ আগস্ট ২০২৪
  • আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার হলে ৯ অগাস্ট, ২০২৪-এ  স্নাতকোত্তর শিক্ষানবিশ মহিলা চিকিৎসককে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে, আজতক বিস্তারিত পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পেয়েছে, যা নির্যাতিতার ওপর হওয়া  নির্মমতা প্রকাশ করে। পিএম রিপোর্ট অনুযায়ী, নিহতের শরীরে ১৪টিরও বেশি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে কোন ফ্র্যাকচার পাওয়া যায়নি।

    মাথা, উভয় গাল, ঠোঁট (উপরের এবং ভিতরের), নাক, ডান চোয়াল, চিবুক, ঘাড় (এপিগ্লোটিসের কাছাকাছি এবং উপরে), বাম হাত, কাঁধ, হাঁটু, গোড়ালি এবং গোপনাঙ্গে আঘাত পাওয়া গেছে। বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গের ওজন ছিল ১৫১ গ্রাম। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, শরীরের অনেক জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে ছইল, পাশাপাশি ফুসফুসে রক্তক্ষরণ দেখা গেছে। ভিসেরা, রক্ত ও অন্যান্য সংগৃহীত নমুনা বিশ্লেষণের জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

    পিএম রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিহতের শরীর ও গোপনাঙ্গে সব আঘাতই ছিল মৃত্যুর আগে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের  ভিত্তিতে মেডিকেল অফিসার বলেছেন, দুই হাত দিয়ে শ্বাসরোধ করায় নিহতের মৃত্যু হয়েছে। তার গোপনাঙ্গে জোরপূর্বক প্রবেশের মেডিকেল প্রমাণ পাওয়া গেছে। পোস্টমর্টেম প্রতিবেদনে ওই মহিলা  চিকিৎসকের যৌন হয়রানির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।

    পোস্টমর্টেম রিপোর্ট যা বলছে
    রিপোর্টে যৌনাঙ্গে  জোরপূর্বক অনুপ্রবেশের প্রমাণও পাওয়া গেছে, যা যৌন নিপীড়নের ইঙ্গিত দেয়। 
    নির্যাতিতার মাথা, মুখ, ঘাড়, বাহু এবং যৌনাঙ্গে ১৪ টিরও বেশি আঘা। 
    মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করা হয়েছে  শ্বাসরোধ, যাকে  ম্যানুয়াল শ্বাসরোধ বলা হচ্ছে। 
    মৃত্যুর পদ্ধতিকে হত্যা বলা হয়েছে।
    রিপোর্টে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশের প্রমাণ সহ সম্ভাব্য যৌন নির্যাতনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। 
    নির্যাতিতার  যৌনাঙ্গে একটি "সাদা, পুরু  তরল" পাওয়া গেছে। 
    রিপোর্টে  ফুসফুসে রক্তক্ষরণ এবং শরীরে রক্ত ​​জমাট বাঁধার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, হাড় ভাঙার কোনো চিহ্ন ছিল না। 
    রক্ত এবং অন্যান্য শারীরিক তরলের নমুনা আরও বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হয়েছে।

    দিল্লি AIIMS-এর চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলবে
    এদিকে এ ঘটনায় সারাদেশের হাসপাতালের চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। দিল্লি AIIMS-এর আবাসিক চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁদের ধর্মঘট চলবে। তবে AIIMS RDA আরও বলেছে যে এদিন সকাল ১১ টা থেকে নির্মাণ ভবনের বাইরে রোগীদের প্রায় ৩৬ ধরনের বিনামূল্যে ঐচ্ছিক OPD পরিষেবা প্রদান করা হবে। দিল্লি AIIMS-এর আবাসিক চিকিত্সকরা ১২ অগাস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে রয়েছেন, কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ন শিক্ষানবিশ ডাক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে ওপিডি এবং ওয়ার্ডগুলি সহ সমস্ত  অ-জরুরি পরিষেবা স্থগিত রয়েছে।

    রাষ্ট্রপতির কাছে পদ্ম পুরস্কারপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের চিঠি
    আন্দোলনরত চিকিৎসকরা নির্যাতিতার বিচার ও চিকিৎসা কর্মীদের সুরক্ষা আইন দাবি করছেন। AIIMS RDA সারা দেশে স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়নের জন্য তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠিও লিখেছে। কলকাতার ঘটনার পর, পদ্ম পুরস্কার বিজয়ী চিকিৎসকদের একটি দল অবিলম্বে হস্তক্ষেপের জন্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে আবেদন করেছেন। গত সপ্তাহের শুরুতে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক প্রতিবাদী চিকিৎসকদের  তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করার আশ্বাস দিয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ১৭ অগাস্ট বলেছিল যে এটি চিকিৎসা  পেশাদারদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করবে।
  • Link to this news (আজ তক)