স্কুলের চার দেওয়ালের মধ্যে আয়োজিত বইমেলা, ৫ দিনে ৭০ হাজার টাকার বই বিক্রি
বর্তমান | ১৯ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: শান্তিপুরের রাধারানি নারী শিক্ষা মন্দিরের চার দেওয়ালে ঘেরা বইমেলা থেকে মাত্র ৫ দিনে বিক্রি হয়েছে ৭০ হাজার টাকার বই! ইদানীং বর্তমান প্রজন্ম মোবাইল আসক্ত বলে যখন সমাজের সর্বস্তরে হা হুতাশ শোনা যায়, তখন এই তথ্য বেশ চমক জাগানো।
কলেজ স্ট্রিট বুক পাবলিশার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় শান্তিপুরের রাধারানি নারী শিক্ষা মন্দিরে বইমেলার আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে নিজেদের স্কুলের ছাত্রীরা তো বটেই, স্থানীয় বাসিন্দা, আশপাশের স্কুল থেকেও শিক্ষক ও পড়ুয়াদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। শনিবার, ১৭ আগস্ট ছিল সেই বইমেলার শেষ দিন। দেখা দিয়েছে, মোবাইলবন্দি জীবন থেকে শৈশবকে কিছুটা মুক্তি দিতে এবং পড়ুয়াদের বইমুখী করতে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তা চূড়ান্ত সফল। সব মিলিয়ে সাড়ে ৪ হাজার বই দিয়ে স্কুলের ভিতরে একটি হল ঘরে সাজানো হয়েছিল বইমেলাটি। তাতে শিশু সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন, উপন্যাস, ইংরেজি সাহিত্য, জীবনীর মতো একাধিক বিষয়ের বই ছিল। মেলার শেষ দিনে দেখা গিয়েছে, প্রায় আড়াই হাজার বই বিক্রি হয়েছে মাত্র ৭ দিনের মধ্যেই। টাকার অঙ্কে তা প্রায় ৭০ হাজার টাকার কাছাকাছি। এত বই বিক্রিতে উদ্দেশ্য অনেকটাই সফল হয়েছে বলে মনে করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল পড়ুয়া এবং আশপাশের মানুষজনের তরফে যে সাড়া মিলেছে তাতে উচ্ছ্বসিত কর্তৃপক্ষ। বইয়ের টানে ছুটে এসেছে ৮ থেকে ৮০, সব বয়সি মানুষই। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা তপতী দাস মুখোপাধ্যায় বলেন, এত বই বিক্রি হবে ভাবতেই পারিনি। আমাদের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়ারা যেমন বই কিনেছে, তেমন আশেপাশের বিভিন্ন স্কুল থেকেও শিক্ষক-পড়ুয়ারা এসেছিলেন। প্রচুর স্থানীয় মানুষজন এসেছেন বই কিনতে। এমনকী প্রাইভেট টিউশন যারা করেন সেরকম বহু মানুষ এসেছিলেন বই কিনতে। সমস্ত ধরনের বইয়ের সমান চাহিদা ছিল। বইমেলার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীর কাছে আমরা যে টেক্সটবুকের বাইরে নতুন করে অন্যান্য বই পৌঁছে দিতে পেরেছি এটাই আমাদের কাছে প্রাপ্তি। আমরা স্কুলে লাইব্রেরি ক্লাস বইমেলায় যাওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক করেছিলাম। তবে ছাত্রীদের মধ্যে উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। এত বই বিক্রি হওয়ার জন্য বুক সেলার্স অ্যাসোসিয়েশন কুড়িটি বই আমাদের স্কুলকে উপহার দিয়েছেন। একটি স্কুল থেকে এত বই বিক্রি হওয়ায় ওঁরাও অভিভূত। তাই স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য ভালো কাজ কিছু করতে আগ্রহ দেখিয়েছেন তাঁরা। ভবিষ্যতে এরকম আরও উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে আমরা বইমুখী করতে পারব বলে বিশ্বাস।