• ফসলের বীজ দিয়ে রাখি বানিয়ে তাক লাগাচ্ছে পলাশীর স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা
    বর্তমান | ১৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পলাশী: মিড ডে মিলের জন্য আনা হয়েছিল কুমড়ো, উচ্ছে, চালকুমড়ো, তেঁতুল, ধান। সেই সব্জির বীজ থেকেই তৈরি হচ্ছে ‘রাখি’। একইসঙ্গে দোকান থেকে কিনে আনার বদলে স্বাধীনতা দিবসের জন্য পতাকা তৈরি করছে পড়ুয়ারাই। ছবিটা মেদিনীপুর সদর পূর্ব চক্রের পলাশী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এই স্কুলের পড়ুয়াদের হাতের কাজ তাক লাগিয়ে দিয়েছে গ্রামের বাসিন্দাদের। জানা গিয়েছে, এক হাজার রাখি তৈরি করবে ছাত্রছাত্রীরা। স্থানীয় সংখ্যালঘু এলাকা সহ একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ছাত্রছাত্রীরা রাখি তৈরি করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, কয়েকজন পড়ুয়া রাখি তৈরি শিখে বাড়ির সদস্যদের শিখিয়েছে। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা রাখি তৈরি করছে বাড়তি আয়ের আশায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌম্যসুন্দর মহাপাত্র বলেন, পড়ুয়ারা নিজেদের উদ্যোগেই রাখি তৈরি করছে। বিভিন্ন সব্জির বীজ দিয়ে রাখি তৈরি হওয়ায় বেশি খরচও হচ্ছে না। স্কুলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। স্কুলের পড়ুয়া বৃষ্টি রাউত, বরুণ কোটাল বলে, স্কুলের শিক্ষকরা রাখি বানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁরা সাহায্য না করলে সম্ভব হতো না। নিজেরা যে রাখি বানাতে পারব, তা ভাবতেই পারিনি। 


    প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালে পলাশী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সূচনা হয়। প্রথমদিকে মাটির বাড়িতেই চলত ক্লাস। সেই সময় নামমাত্র ছাত্রছাত্রী পড়তে আসত। ২০১০ সালের পর থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। ধীরে ধীরে স্কুলের পরিকাঠামো বদল হয়। আগে স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা থাকত নামমাত্র। বর্তমানে খালডাঙ্গি, তেল্যা, দোগাছিয়া সহ একাধিক এলাকার শতাধিক পড়ুয়ারা এই স্কুলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। জানা গিয়েছে, ২০১৭ নির্মল বিদ্যালয়, ২০১৯ সালে জেলার সেরা শিশু মিত্র পুরস্কার পেয়েছে এই স্কুল। এছাড়াও ২০২১ - ‘ ২২ সালে জেলাভিত্তিক স্বচ্ছ বিদ্যালয় পুরস্কারও পেয়েছে। স্কুলের শিক্ষকরা চাইছেন, পড়ুয়াদের পড়াশোনার পাশাপাশি নানা ধরনের পাঠ দিতে।স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আগে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যেতে চাইত না। কিন্তু এখন ছবিটা বদলেছে। স্কুলের পড়াশোনার ধরনও অনেকটাই আলাদা। এই স্কুল থেকে পড়াশোনা করে অনেকেই সফল হয়েছে। এই স্কুলে ৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। এছাড়া অলচিকি ভাষার শিক্ষকও আছেন। 


    এদিন অভিভাবক লালমোহন ঘোষ ও সবিতা সিং বলেন, দারুণ উদ্যোগ নিয়েছে স্কুল। বাড়ির শিশুরা খুব খুশি। স্কুলের সহ শিক্ষক কৌশিককুমার লোধ, অসীমকুমার মণ্ডল বলেন, স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের জন্মদিনও পালন করা হবে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)