আরজি কর নিয়ে নাগরিক প্রতিবাদে উত্তাল রাজ্য। সেই প্রতিবাদকে কি আদৌ কাজে লাগাতে পারছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি? পদ্ম নেতারা ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। কিন্তু বিজেপির অন্দরে অনেকের অভিমত, এই আন্দোলনে বিজেপি অংশীদার হতে পারেনি।গত বুধবার ‘মহিলাদের রাত দখল’ কর্মসূচি দেখার পরে নড়েচড়ে বসেছে গেরুয়া শিবির। কলকাতা এবং জেলাগুলিতে বেশ কিছু মিছিল এবং প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে তারা। কিন্তু কোনওটাই যে জনমানসে সে ভাবে দাগ কাটতে পারেনি, তা ঘনিষ্ঠমহলে স্বীকার করেছেন বিজেপির বহু শীর্ষ নেতাই।
রাজ্য বিজেপি-র এক পদাধিকারীর কথায়, ‘আন্দোলন এখন পর্যন্ত যা হচ্ছে, তা সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ। বিরোধী কোনও রাজনৈতিক দলই তার নেতৃত্ব নিজের হাতে নিতে পারেননি। বলতে বাধা নেই, নিজেদের পালে হাওয়া টানার চেষ্টা আমাদের করতেই হবে। বিজেপি রাজনৈতিক দল, নাম সংকীর্তনের দল তো নয়!’
আরজি কর ইস্যুতে নাগরিক সমাজের আন্দোলনের পাশাপাশি নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে চাইছে বিজেপি। সূত্রের খবর, তা নিয়ে দলের অন্দরে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়াতে একগুচ্ছ কর্মসূচির সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রবিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, আরজি কর ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি জোরালো করতে চলেছেন তাঁরা।
সুকান্ত বলেন, ‘আগামী ২০ তারিখ থেকে আরজি করের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ধর্নায় বসছি আমরা। সোমবারই আদালতে অনুমতি চাইব। প্রাথমিক ভাবে ২৩ তারিখ পর্যন্ত এই ধর্না কর্মসূচি চলবে।’ তাতে দলের বিধায়ক, সাংসদরা সামিল হবেন বলেও জানিয়েছেন সুকান্ত। তবে ধর্নার স্থল এখনই বিজেপি ঘোষণা করতে চায়নি। এ দিন স্বাস্থ্যভবন ঘেরাও করার ডাকও দেওয়া হয়েছে বিজেপির তরফে।
সুকান্ত বলেন, ‘আগামী ২২ তারিখ স্বাস্থ্যভবন ঘেরাও করব। তাতে সামিল হওয়ার জন্য সকলকে আহ্বান করছি।’ বিজেপি ঠিক করেছে, আজ, সোমবার রাখিবন্ধন উৎসব উপলক্ষ্যে কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে সাধারণ মানুষকে রাখি পরাবেন বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মীরা।
তবে বিজেপির একটা অংশ চাইছে, তাড়াহুড়ো না করে নাগরিক সমাজের অন্দোলন কোন পথে এগোয়, তা পর্যবেক্ষণ করতে। কিন্তু তত দিন চুপ করে বসে না-থেকে সমান্তরাল প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী সুকান্তরা। তৃণমূল অবশ্য মনে করছে, বিজেপির কোনও স্বপ্নই পূরণ হবে না। কারণ বিজেপি-শাসিত রাজ্যে মহিলাদের কী হাল, তা অজানা নয় বাংলার মানুষের।