'চোখ দিয়ে রক্ত গড়াচ্ছিল', মেয়েকে দেখে শিউরে ওঠেন নির্যাতিতার মা
এই সময় | ১৯ আগস্ট ২০২৪
'সব কিছুই চলে গিয়েছে। আর কিছুই নেই', ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বললেন আরজি করে মৃত তরুণী চিকিৎসকের মা। ৯ অগস্ট শুক্রবার সকাল ১০টা ৫৩ মিনিট। এক ফোনেই পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায় তাঁর। মৃত তরুণী চিকিৎসকের মা জানান, সেই দিন সকালে একটি ফোন পান তিনি। অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার’ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। মেয়ে অসুস্থ বলে তাঁকে প্রথমে জানানো হয়। পরে বলা হয় মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন, দাবি মৃতার মায়ের।হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়েই তাঁরা ছুটেছিলেন হাসপাতালে। চারতলার সেমিনার হলে মেয়েকে দেখে চমকে গিয়েছিলেন তিনি। ধরা গলায় সেই ভয়াবহ মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন মৃতার মা।
সংবাদ সংস্থা 'এএনআই'-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'ওকে যখন প্রথম দেখি পরনে প্যান্ট ছিল না। গায়ে শুধু একটা জামা ছিল। চাদর দিয়ে মোড়া ছিল গা। হাতটা ভাঙা ছিল। চোখ এবং মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল।'
তাঁর সংযোজন, ‘মেয়ের এই অবস্থা দেখেই বলেছিলাম যে এটা আত্মহত্যা হতে পারে না। আমরা অনেক কষ্ট করে মেয়েকে বড় করেছিলাম।’ মৃত চিকিৎসকের বাবা বলেন, 'আমাদের কাছে আর কিছু নেই। আমরা সুবিচার চাইছি।' কাজের চাপ মেয়ের উপর ছিল বলে জানান তাঁরা। তবে আলাদা কোনও ধরনের সমস্যা বা চাপের বিষয়ে মেয়ে কোনওদিন জানায়নি, এই সাক্ষাৎকারে জানালেন আরজি করের মৃত তরুণী চিকিৎসকের মা।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তভার সিবিআই-কে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মোতাবেক শুরু হয়েছে তদন্তও। মৃতার পরিবার জানাচ্ছেন, তাঁরা সিবিআই তদন্তে ভরসা রাখছে। আরজি করের ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। আপাতত সে রয়েছে সিবিআই হেফাজতে। যদিও মৃতার পরিবারের দাবি, এই ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত রয়েছেন বলে তাঁরা মনে করছেন। 'ভেতরের কেউ' রয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ড নিয়ে রাজ্যে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে। ইতিমধ্যেই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সুয়োমোটো মামলা গ্রহণ করেছে। মঙ্গলবার এই মামলা শুনতে চলেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।