ফারুক আলম: টকটকে লাল। রূপে-সুগন্ধে ভরপুর। কাঁটা কম। চোখ ধাঁধানো উন্নত প্রজাতির এই ‘ডাস্ট গোলাপ’ এক সপ্তাহ পর্যন্ত সতেজ থাকে। সোমবার রাখি। সম্প্রীতির এই উৎসবে নিউটাউন শহর ঘেঁষা রাজারহাট ব্লকের চাষিদের উৎপাদিত ডাস্ট গোলাপেই ‘তাজা রাখি’ হাতে পরবে কলকাতা শহর ও শহরতলির মানুষ।
চাষিদের বক্তব্য, “রাখি উৎসবকে সামনে রেখে রাজারহাটের মাটিতে তৈরি প্রায় ৫০ হাজার গোলাপের রাখি সাপ্লাই গিয়েছে। খুচরো বাজারে প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে।” রাজারহাট ব্লকের চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত নার্সারি মহল হিসাবে পরিচিত। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের শিখরপুর, ঝালগাছি, বাগু, হুদোর আইট, নয়াবাদ, কাশীনাথপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বড় অংশের মানুষ নার্সারি চাষ ও ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। এখানে কৃষকরা সারা বছর দেশি-বিদেশি মিলিয়ে হরেক রকম ফুল-ফলের চারাগাছ, কার্পেট ঘাস, ফুলচাষ ইত্যাদি তৈরি করে থাকেন।
চাষিরা অনেকেই জানিয়েছেন, রাজারহাটের উর্বর মাটিতে উৎপন্ন ডাস্ট গোলাপ-সহ ম্যাডগড, ম্যানুপাল, সসবেরি , ডবল ডিলাইট, মোনাকো-সহ নানা প্রজাতির গোলাপের চাহিদা গত কয়েকদিনে তুঙ্গে উঠেছে। পাশাপাশি রাখি উপলক্ষে বাজারগুলিতে রাজারহাটের চাষের গোলাপের দামও বেড়েছে। ঝালগাছি মোড়ের কাছে ফুল বিক্রেতা রাকেশ মোল্লা বলেন, “চাঁদপুরের বিঘার পর বিঘা জমিতে লাল, সাদা, গোলাপি, হলুদ হরেক রঙের গোলাপ চাষ হয়। এখন গোলাপের অফ মরশুম। তাই রাখি উৎসবে বাজারে গোলাপের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। সেই তুলনায় জোগান কম। ফলে খুচরো বাজারে কাঁচা গোলাপে তৈরি রাখির দামও বেড়েছে।”
চাঁদপুর অঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বর্তমান বাজারে গোলাপের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অজানা একটি ভাইরাসের হামলায় ক্ষতি হচ্ছে গোলাপ চাষের। গাছে ফুল ও পাতা নষ্ট হচ্ছে। বাজারে ওষুধও মিলছে না। কৃষকদের বক্তব্য, “জল, সার, কীটনাশক, মজুরি ইত্যাদি মিলিয়ে বিঘা প্রতি জমিতে গোলাপ চাষে দেড়-দু লক্ষ টাকা খরচ হয়। তা বিক্রি হয় আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকায়।”