এই সময়: স্টেশনের সাইকেল স্ট্যান্ডে সাইকেল রাখার সময়েই ঋজু ভৌমিক বুঝতে পেরেছিলেন, হিসেবে গোলমাল হয়ে গিয়েছে। তাঁর রিস্টওয়াচ অনুযায়ী ট্রেন আসতে তখনও কয়েক মিনিট বাকি। তবে সাইকেল থেকে নামার সময়েই তিনি দেখেন স্টেশনে ট্রেন ঢুকছে। মরিয়া দৌড় লাগিয়ে একটা শেষ চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ট্রেন ধরতে পারেননি।চোখের সামনে দিয়েই বেরিয়ে গিয়েছিল ট্রেন। বিরক্তিতে তিনি প্ল্যাটফর্মের ডিসপ্লে ক্লকের দিকে তাকালেন। কই তাঁর রিস্ট ওয়াচ তো প্ল্যাটফর্মের ঘড়ির সময়ই দেখাচ্ছে! তা হলে? ট্রেনের নিত্যযাত্রীর জন্য ঘড়ি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা সামগ্রী। এমনিতে ভারতীয় রেলের সময়ানুবর্তিতা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই।
তবু, প্রতি বছর নতুন টাইম টেবল প্রকাশ হলে প্রায় প্রত্যেকেই সেই টাইম টেবল কেনেন। কোন স্টেশনে কোন ট্রেন কখন আসবে, সেটা মনে রেখেই যাত্রীরা নিজেদের ডেলি রুটিন সাজান। তবে একই সময়ে এক একটা স্টেশনে রেলের ডিসপ্লে ক্লকে এক এক রকমের সময় দেখানোর নজিরও কম নেই।
রেলের ঘড়িতে দেখানো সময় নিয়ে যাত্রীদের এমন বিভ্রান্তি না ভোগ করতে হয়, তার জন্যই বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ভারতীয় রেল। এর জন্য দেশের ৭,৩০০-র বেশি স্টেশনে জিও-সিংক্রোনাইজ়ড ক্লক বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থায় দেশের সব প্রান্তের প্রতিটা স্টেশনের সব ঘড়ি একই সময় দেখাবে।
এই রকমের ঘড়ি বসানোর ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে—এমনটাই দাবি পূর্ব রেলের। পূর্ব রেলের আওতায় থাকা ৫৮০টি স্টেশনের মধ্যে ৪০টি স্টেশনে এমন ঘড়ি বসানো হয়েছে। রেলওয়ে জ়োনের কোনও নির্দিষ্ট ডিভিশন নয়, কাজ চলছে র্যান্ডম পদ্ধতিতে স্টেশন বেছে নিয়ে। পূর্ব রেল জানিয়েছে, হুগলি ঘাট, গরিফা, দেবীপুর, পালসিট, গাংপুর, জৌগ্রাম, পাল্লা রোড, খামারগাছি, বলাগড়, সোমরাবাজার, বাগনাপাড়া, প্রান্তিক, কোপাই, বাতাসপুর-সহ আরও কিছু স্টেশনে এমন ঘড়ি বসেছে।
রেল জানিয়েছে, যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য গোটা দেশের সব ক’টা রেলওয়ে জ়োনেই নানা রকমের উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। জিও-সিংক্রোনাইজ়ড ঘড়ি বসানো তারই একটি উদ্যোগ।