বাংলায় পিছিয়ে গেল বিজেপির সদস্যসংগ্রহ অভিযান, নেপথ্যে ঠিক কী কারণ রয়েছে?
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৯ আগস্ট ২০২৪
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশজুড়ে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। প্রত্যেক রাজ্যে সেই অভিযান করা হবে। তবে বাংলায় অভিযান শুরু করার বিষয়ে বাড়তি সময় নিতে চলেছে। কারণ, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার জেরে এখন পরিস্থিতি খুব গম্ভীর। শনিবার দেশের সব রাজ্যের প্রতিনিধিরা এসে নয়াদিল্লিতে সদস্য সংগ্রহ বৈঠকে যোগ দেয়। সেখানে বাংলার নেতাদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এখন এই ঘটনায় রাজ্য নেতৃত্বকে আন্দোলন চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তাই বাংলায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে দেরি হবে। রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই কাজে।
বিজেপির নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক ৬ বছর অন্তর দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান করতে হবে। নিয়ম। তখন কোনও নেতা বা কর্মীই আর সদস্য থাকবেন না। শনিবার সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা নির্দেশের পরে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ থেকে শুরু করে সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী এবং আরও অনেকে নতুন করে প্রাথমিক সদস্যপদ নেবেন। কিন্তু বাংলায় বিজেপির যা সংগঠনের হাল তাতে সদস্য কতজন হবেন তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। তবে বিজেপির একাংশ চান, এখন আরজি কর হাসপাতালের ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে যদি সদস্য সংগ্রহ করা যায় তাহলে বাড়তি লাভ হতে পারে। এই বিষয়ে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাজ্যের এখনকার পরিস্থিতির জেরে অভিযান পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট সময়েই সদস্য সংগ্রহ করা হবে।’ সেই দিন জানানো হয়নি।
এই কর্মসূচি নিয়ে বাংলায় প্রস্তুতি বৈঠক হবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর। তবে অভিযান নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ হবে না। কারণ, বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, এখন রাজ্যে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে শাসক–বিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছে। তাই অন্য কোনও কর্মসূচিতে নেতা–কর্মীদের ব্যস্ত না করে আন্দোলনে থাকাই ঠিক হবে। সেক্ষেত্রে রাজ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামবে না রাজ্য বিজেপি। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই এই সদস্য সংগ্রহ অভিযান হবে। শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘কবে বৈঠক হবে এখনও সেটা ঠিক হয়নি। হলে সঠিক সময়েই দলের পক্ষ থেকে জানানো হবে।’
এই প্রথম বড় কোনও কর্মসূচির দায়িত্ব পেলেন শমীক ভট্টাচার্য। এই ঘটনায় অনেকে অসন্তুষ্ট হলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বার্তায় সরাসরি কেউ বিদ্রোহ করেননি। কারণ ২০২১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের কেরামতি দেখে নিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দুষ্মন্ত গৌতম বাংলা ছাড়া ওড়িশা, সিকিম এবং ত্রিপুরায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান দেখবেন। তবে বাংলার দায়িত্ব সম্পূর্ণ শমীকের। বিজেপির সবচেয়ে পুরনো এবং সক্রিয় নেতা শমীক। রাজ্যের প্রধান মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এখন রাজ্যসভায় পাঠানো হয়েছে। আদি–নব্য সকল নেতার সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক শমীকের। কর্মীদেরও তিনি ভাল করে চেনেন। তাই শমীকের কথায়, ‘দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। আমি আদি–নব্য বিভাজনে বিশ্বাস করি না। তবে এবার বাংলায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা অনেক বাড়বে।’