এই সময়, হাওড়া: রবিবার ডার্বি ম্যাচ বাতিল ও আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহামেডান সমর্থকরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাওড়ার যুবক রজতশুভ্র নন্দীকে (২৬) থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর লকআপে আটকে রাখে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশে তিনি ছাড়া পান। বাড়ি ফিরে এলেও তাঁর চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ এখনও স্পষ্ট।হাওড়ার সাঁতরাগাছি থানার অন্তর্গত শরৎপল্লির বাসিন্দা রজত ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ থাকলে তিনি মাঠে হাজির থাকবেনই। তিনি জানান, রবিবার দুপুর বারোটা নাগাদ রাজ্য পুলিশের আইটি সেল থেকে ফোন করে তাঁকে বলা হয় সল্টলেক স্টেডিয়ামের জমায়েতে না যেতে। কারণ তাঁর নেতৃত্বে নাকি একটি বড় মিছিলের খবর পুলিশের কাছে আছে।
রজতের দাবি, ওই ফোনে জানানো হয় তাঁর মোবাইল নম্বর দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরই বি গার্ডেন ও সাঁতরাগাছি থানার পুলিশ এসে একই অভিযোগে দুপুর তিনটে নাগাদ তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। রাত বারোটা পর্যন্ত তাঁকে থানায় বসিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। সেই রাতেই বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ তাঁকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নিজস্ব থানায় লকআপে নিয়ে যায়।
সারারাত রজত লকআপে কাটালেও সে খবর তাঁর বাড়ির লোকজনকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। সোমবার সকাল ছ’ নাগাদ তাঁর বাবা-মা সাঁতরাগাছি থানায় গেলে তাঁদের জানানো হয় ছেলেকে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পরই ওই পরিবার কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী এবং সিপিএম নেতা সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর পরামর্শে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে প্রধান বিচারপতি রজতকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
রজত বলেন, ‘আন্দোলন করা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ ভাবে মানুষের কণ্ঠরোধ করা যায় না। অন্যায় হলে আবার পথে নামব।’ তাঁর বাবা অনিমেষ নন্দী বলেন, ‘কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সন্দেহের বশে ছেলেকে লকআপে রেখে হেনস্থা করা হলো।’