এই সময়, মেদিনীপুর: এ একেবারে আক্ষরিক অর্থেই কাদায় পড়া! নিশুত রাতে লুটপাট চালানো গিয়েছিল সহজেই। তার আগে তিন নিরাপত্তারক্ষীকে বেঁধে একটা ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছিল ১০-১২ জনের দুষ্কৃতীদলটি। নিশ্চিন্তে মূল্যবান বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম চুরি করে বোঝাই করা হয় সঙ্গে আনা লরিতে।কিন্তু চোরাই জিনিস নিয়ে পালানোর সময়ে কাদায় ফেঁসে যায় সেই লরির চাকা। বহু চেষ্টা করেও সরানো যায়নি। ফলে একসময়ে ধরা পড়ার ভয়ে চোরাই মাল সমেত লরি রেখেই পালাতে হয় দুষ্কৃতীদের। ঘটনাটি ঘটেছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা থানার হেমতপুর এলাকায়।
চন্দ্রকোণা এলাকায় বিদ্যুৎ দপ্তরের একটি প্রজেক্টে কাজ করছে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি ঠিকাদার সংস্থা। হেমতপুরে একটি পাঁচিল ঘেরা জায়গায় সমস্ত মালপত্র মজুত করেছে তারা। বহু টাকার সরঞ্জাম থাকায় নিরাপত্তারক্ষীও মোতায়েন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, রবিবার রাতে একদল দুষ্কৃতী একটি ১০ চাকার লরি নিয়ে ওই এলাকায় ঢোকে। নিরাপত্তারক্ষীদের একটি ঘরে ঢুকিয়ে, হাত-পা বেঁধে দেয় তারা।
এর পরে লরিতে মূল্যবান তার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম বোঝাই করে নেয়। কিন্তু রাতে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাঘাট কাদায় ভর্তি ছিল। পালানোর সময়ে কাদায় সেই লরির চাকা ফেঁসে যায়। বহু চেষ্টা করেও লরিটি নিয়ে পালাতে না পেরে শেষপর্যন্ত রণে ভঙ্গ দেয় চোরেরা। চুরির সরঞ্জাম বোঝাই লরি ফেলে রেখেই পালায় তারা। পরে ফোন করে ঘটনার কথা পুলিশ এবং ঠিকাদারকে জানান নিরাপত্তাকর্মীরা। ঘটনাস্থল থেকে লরিটিকে আটক করেছে পুলিশ। লরির নম্বর দেখে সূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে।
ঠিকাদার সংস্থার কর্মী সাধন মাইতি বলেন, ‘দুষ্কৃতীরা নিরাপত্তারক্ষীদের আমার রুমে ঢুকিয়ে হাত-পা বেঁধে দেয়। তবে পালানোর সময়ে ওদের লরির চাকা কাদায় আটকে যায়। অনেক চেষ্টা করেও লরি এগোতে না পেরে সব ছেড়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।’
ঘটনার কথা স্বীকার করে বিদ্যুৎ দপ্তরের ঘাটাল ডিভিশনাল ম্যানেজার বিশ্বদেব বিশ্বাসি বলেন, ‘আমাদেরই দপ্তরের একটি প্রজেক্টের কাজ হচ্ছিল। যেখানে সরঞ্জাম মজুত করা ছিল, সেখানে দুষ্কৃতীরা চড়াও হয় বলে শুনেছি। সব চুরি করে লরিতে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কাদায় চাকা আটকে যায়। তাই লরি ছেড়ে পালায় ওরা। প্রজেক্ট ম্যানেজারকে বলা হয়েছে পুলিশে অভিযোগ করার জন্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত দেড়-দু’মাস ধরে বিদ্যুতের তার, ট্রান্সফরমার ইত্যাদি চুরি বেড়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘চন্দ্রকোণার হেমতপুরের ঘটনার কথা শুনেছি। লরিটিকে আটক করা হয়েছে। তবে সোমবার বিকেল পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ দায়ের হলে ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে।’