'...সন্দীপ ছিলেন সুবোধ', আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে নিয়ে ভিন্ন সুর স্কুলের
এই সময় | ২০ আগস্ট ২০২৪
ছাত্রাবস্থায় সন্দীপ 'সুবোধ' ছিলেন। বন্ধু বান্ধব খুব বেশি ছিল না। তবে স্কুলের বিভিন্ন 'ভালো কাজ'-এ প্রথমেই থাকতেন তিনি। মেধার জোরে ডাক্তার হয়েছিলেন। কিন্তু...! আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে একাধিকবার তলব করেছে সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠছে। আর তাতেই অবাক বনগাঁ হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক থেকে শুরু করে সন্দীপ ঘোষের স্কুলের সিনিয়ররাও।আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সিবিআইয়ের তলবে সোমবার চতুর্থবারের মতো সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন। আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় আন্দোলনকারীদের অন্যতম দাবি ছিল তাঁর পদত্যাগ বা অপসারণ। তিনি স্বেচ্ছায় অধ্যক্ষ পদ ছাড়েন এবং চাকরি থেকেও ইস্তফা দিয়েছিলেন। যদিও তাঁর পদত্যাগ গ্রহণ হয়নি। বরং তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। তা নিয়ে নতুন করে শুরু হয় বিক্ষোভ। কলকাতা হাইকোর্ট তাঁকে 'লম্বা ছুটি'-তে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মোতাবেক আপাতত তিনি ছুটিতেই রয়েছেন।
আরজি করের ঘটনায় সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে বারংবার প্রশ্ন তুলছেন আন্দোলনকারীরা। চিকিৎসকের একাংশও তাঁর বিরুদ্ধে সরব। কিন্তু, সংবাদ মাধ্যমে স্কুলের মেধাবী ছাত্রের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগে হতবাক তাঁর স্কুলের শিক্ষককরা। বনগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে প্রায় ৮০ শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন সন্দীপ। স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দেবাশিস রায়চৌধুরী বলেন, 'ও যখন স্কুলে পড়ত আমি তখন তরুণ। সন্দীপ পড়াশোনায় ভালো ছিল। স্কুলের বিভিন্ন গঠনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকত। কোনওদিন দুষ্টুমি করতে দেখিনি। টিভিতে যখন প্রথম সন্দীপ নামটা দেখি তখনও ভাবতে পারিনি ও আমার ছাত্র। আমরাও বিষ্মিত।'
বনগাঁ হাইস্কুলের শিক্ষক চন্দন ঘোষ বলেন, 'ও অত্যন্ত মেধাবী ছিল। সেই সময় ডাক্তারিতে সুযোগ পাওয়া অত্যন্ত কঠিন ছিল। ওর বিষয়ে অভিযোগগুলো এখন জানতে পারছি। যদি ওর দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে শাস্তির দাবি করব।'
সন্দীপের স্কুলের এক সিনিয়র অবশ্য বিশ্বাসই করতে পারছেন না তাঁদের প্রিয় নোটন (ডাক নাম) এই ধরনের কোনও ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই ব্যক্তি বলেন, 'ও ১৯৮৯ সালে পাশ করেছিল, আর আমি ১৯৮২। আমাদের মধ্যে একটা দূরত্ব রয়েছে। ওর সেভাবে বন্ধু ছিল না। তা নিয়ে মজাও করতাম আমরা। ও বরাবর শান্ত।'
স্কুলের জুনিয়র নোটন (সন্দীপ) ডাক্তার হওয়ার পরেও পরোপকার ছাড়েননি, দাবি করেছেন তিনি। কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'একবার আমার এক পরিচিত টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছিলেন না। নোটন তখন ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজে ছিলেন। আমি ওকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছিলাম। ও সাহায্য করেছিল। দোষী প্রমাণিত হলে আমি ওর শাস্তি চাইব। না হলে আবার একসঙ্গে পুজো কাটাব।’