নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: রাজনগরের তাঁতিপাড়ার শুধু রেশমের শাড়ি নয়, কালো কলাইয়ের জিলিপির সন্ধানেও আসেন অনেকে। বিশেষ স্বাদ ও ভিয়ানের এই জিলিপিই এখানের অন্যতম আকর্ষণ। বহু বছর ধরে কলাই থেকে বানানো এই বিশেষ জিলিপি রাজ্য ছাড়িয়ে দূরদূরান্তে পাড়ি দিয়েছে। এলাকায় গেলে, একবার অন্তত এই জিলিপি মুখে তুলে দেখেন সকলেই। বীরভূমের আর কোথাও এই ভিয়ানের জিলিপি চোখে পড়ে না। ফলে তাঁতিপাড়া এলাকার কয়েকজন মিষ্টি কারিগরের বেশ সুনাম রয়েছে এই জিলিপি তৈরিতে।
জানা যায়, মাত্র গু’টি কয়েক মিষ্টির দোকানই এই জিলিপি তৈরি করে। কোনও দোকানের ৫০ বছর, কোনটার আবার ৭৫ বছর বয়স। এমনিতে সাধারণত বাজার থেকে কেনা বেসন থেকে জিলিপি তৈরি করা হয়। কিন্তু এখানে কালো কলাই থেকে জিলিপি বানানো হয়। একেবারে ছোট ছোট আকারে বিশেষ পাকে এই জিলিপি তৈরি হয়। খেতেও বেশ সুস্বাদু ও মুচমুচে। সেই নিয়ে কথা হচ্ছিল এলাকার এক দোকানদার রাহুল দের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই কালো কলাইয়ের জিলিপির মূল্য কেজি প্রতি ১৬০ টাকা। প্রতিদিন ২০ কেজি ডাল উড়ে যায় বলা চলে। সকালে ভাজা হলে সন্ধ্যার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। আমাদের এই ব্যবসা তিন পুরুষেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে। সবথেকে বেশি চাহিদা থাকে ভাইফোঁটা আর দুর্গাপুজোর সময়। একমাত্র আমাদের এখানেই এই জিলিপি বানানো হয়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বিশ্বনাথ কবিরাজ জিলিপি খেতে খেতে বলছিলেন, আমাদের এলাকাকে মানুষ সাধারণত রেশম, তসরের শাড়ির জন্যই চেনেন। বহু মানুষ শাড়ি কিনতে আসেন। এলাকার বেশিরভাগ মানুষই এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু সেই সঙ্গে এই জিলিপিও অন্যতম আকর্ষণ। কেননা আর কোথাও এই কালো কলাইয়ের জিলিপি পাইনি। একবার খেলে দ্বিতীয়বার খেতে মন যাবে। আমরাও আত্মীয় বাড়িতে এই জিলিপি পাঠাই। সকলেই খেয়ে প্রশংসা করেন। আরও ভালোভাবে প্রচার পেলে সিউড়ির মোরব্বার মতো এই জিলিপিও নিশ্চিত করে রাজ্যবাসীর কাছে নাম কুড়াবে।