পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধিকাংশেই নেই নিরাপত্তারক্ষী, আতঙ্কে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা
বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার পর শিলিগুড়ি পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা নিয়ে উঠল প্রশ্ন। অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বিশেষ করে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরাই সামলান। নিরাপত্তা কর্মী নেই সেখানে। সবক’টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তারও নেই। মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি আশা কর্মীরাও এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধীনে কাজ করেন। আর জি কর কাণ্ডের পর এই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির রাস্তায় পুরসভা পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করা মহিলারা মিছিল করেন। যোগ দেন চিকিৎসকরাও।
শিলিগুড়ি পুরসভার ১০টি আরবান প্রাইমারি হেল্থ সেন্টার (ইউপিএইচসি) ও ১৫টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ছ’টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন করে ডাক্তার বসেন। বাকিগুলিতে এখনও নেই। এই পরিস্থিতিতে কাজ করতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁরা বলেন, আর জি কর হাসপাতালের মতো বড় হাসপাতালে যেভাবে একজন মহিলা চিকিৎসককে খুন হতে হয়েছে তাতে আমারা এখানে কাজ করতে আতঙ্কে রয়েছি। এখানে নিরাপত্তা বলে কিছুই নেই। শুধু আর জি কর নয়, সম্প্রতি শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে এক প্রসূতির স্বামী লোহার রড নিয়ে ওয়ার্ডে ঢুকে কর্তব্যরত নার্সের ওপর চড়াও হয়েছিল। হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী ওই ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন। তাই বড় কিছু না ঘটলেও ওই ঘটনার পর আতঙ্ক আরও জাঁকিয়ে বসেছে।
সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিরাপত্তা কর্মী তো দূরের কথা, পুরুষ কর্মীও সব জায়গায় নেই। এই পরিস্থিতিতে কাজ করাটা তাঁদের কাছে আরও আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় থাকা এই সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অনেকগুলি বস্তি এলাকায়, নির্জন পরিবেশে। উদ্ভুদ পরিস্থিতিতে এখানে আতঙ্কের মধ্যে কাজ করছেন বলে জানান মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি বড় অংশ।
পুরসভার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তার অভাবের বিষয়টি অস্বীকার করেননি শিলিগুড়ি পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য দুলাল দত্ত। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি। আমাদের ইউপিএইচসি ও সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি রাজ্য সরকারের নির্দেশেই চলছে। সিকিউরিটি গার্ড রাখার ব্যাপারে রাজ্য সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে বিষয়টি আমরা রাজ্যকে জানাব। আর জি কর কাণ্ডের পর আশা করি, সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ইউপিএইচসি’তে কর্মরত মহিলা কর্মীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে রাজ্য সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ করবে।