• হঠাত্ থমকে পুজোর বুকিং, ডুয়ার্সের অর্ধেক হোটেল-রিসর্ট এখনও ফাঁকা
    বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: আচমকা থমকে পুজোর বুকিং। ডুয়ার্সে এখনও ফাঁকা ৫০ শতাংশ হোটেল-রিসর্ট। বুকিংয়ের এই ট্রেন্ড ভাবাচ্ছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের। তাঁদের বক্তব্য, পুজোর সময় কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গে আসার সমস্ত ট্রেনে লম্বা ওয়েটিং লিস্ট। অথচ ডুয়ার্সে বুকিং নেই সেভাবে। ট্যুর অপারেটরদের দাবি, অনেকেই শিয়ালদহ বা হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত ট্রেনের টিকিট কেটে রেখেছেন। কিন্তু, পাহাড়ে না ডুয়ার্সে কোথায় ঘুরতে যাবেন, এনিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। তবে স্থানীয় ট্যুর অপারেটরদের দাবি, পুজোয় যাঁরা উত্তরবঙ্গে বেড়াতে আসছেন, তাঁদের বেশিরভাগেরই পাহাড়ে যাওয়ার ঝোঁক। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের কী অবস্থা থাকবে, তা দেখে তাঁরা গন্তব্য চূড়ান্ত করবেন। সেইমতো প্যাকেজ সাজানো হবে। ফলে যদি সিকিমে যাওয়ার জাতীয় সড়ক খোলা থাকে, তাহলে ডুয়ার্সে সব হোটেল ভর্তি হবে না পুজোয়।  


    লাটাগুড়ি, মূর্তি, গোরুমারার পর্যটন ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ডুয়ার্সে বুকিং থমকে যাওয়ার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। অনেকেই ছিলেন, যাঁরা ভুটানে ঘুরতে যাওয়ার বা আসার পথে এক-দু’দিন ডুয়ার্স ঘুরে যেতেন। কিন্তু ভুটানে পর্যটকদের দৈনিক মাথাপিছু ১২০০ টাকা করে ফি ধার্য হওয়ায় অনেকেই মুখ ফেরাচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবে পর্যটকের সংখ্যা কমছে ডুয়ার্সে। তাছাড়া পুজোয় গোরুমারায় সরকারি বাংলোয় থাকার জন্য অনলাইনে বুকিং করা যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে ডুয়ার্সের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন পর্যটকরা। 


    লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব বলেন, কিছুদিন আগেও পুজোর বুকিং নিয়ে অনেকেই টেলিফোনে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। কিন্তু, আচমকা তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নতুন করে কোনও বুকিং হচ্ছে না। এখনও লাটাগুড়ি, গোরুমারায় বেসরকারি হোটেল, রিসর্ট ও হোম স্টের ৫০ শতাংশ ফাঁকা। শেষপর্যন্ত যদি ছবিটা না বদলায়, তাহলে পুজোয় ব্যাপক মার খাবে ব্যবসা। 


    লাটাগুড়িতে বেসরকারি হোটেল, রিসর্ট ও হোম স্টে মিলিয়ে ৮০টির মতো রয়েছে। হাজার চারেক পর্যটক থাকতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে সরকারি থাকার জায়গা। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত সেভাবে বুকিং না হওয়ায় চিন্তিত পর্যটন ব্যবসায়ীরা। বনদপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, এখন জঙ্গল বন্ধ। ১৬ সেপ্টেম্বর জঙ্গল খোলার পর অনলাইন বুকিং করতে পারবেন পর্যটকরা। যদিও পর্যটকদের প্রশ্ন, ১৬ সেপ্টেম্বর বুকিং খুললে কী করে পুজোয় ঘুরতে যাওয়া সম্ভব? 


    অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু বলেন, পর্যটক টানতে আমরা ভিজিট ডুয়ার্স-২০২৪ প্রোগ্রাম চালাচ্ছি। কিন্তু বন ও পর্যটন দপ্তরেরও উচিত, এগিয়ে আসা। না হলে এবার পুজোতেও ডুয়ার্সের লক্ষ্মীলাভ হবে না। কারণ এখনও পর্যন্ত বুকিংয়ের যা ট্রেন্ড, তাতে পুজোয় বেশিরভাগ পর্যটকই পাহাড়ে যেতে চাইছেন। অন্যবারও এই ট্রেন্ড থাকে। কিন্তু তা আরও বেশি।  গোরুমারা এলাকায় পর্যটক নিবাস। - ফাইল চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)