• বেলা ১২টাতেও ডাক্তার নেই শিশু বিভাগে, ক্ষোভ
    বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: সকাল ৯টা থেকে বাবা-মায়েরা তাঁদের কোলের সন্তানকে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের শিশু বিভাগে। কারও সন্তানের ধুম জ্বর। কারও পেট খারাপ। কোনও শিশু সর্দি-কাশিতে রীতিমতো কাহিল হয়ে পড়েছে। একটানা কেঁদে চলেছে। প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ সন্তানকে সামলাতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা মায়ের। অথচ আউটডোরে চিকিৎসকের দেখা নেই। এদিকে, ঘড়ির কাঁটা ঘুরেই চলেছে। সকাল ১০টা...১১টা...বেলা ১২টা। অসুস্থ সন্তান কোলে ঠাঁয় তিন-চার ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও আউটডোরে চিকিৎসক না আসায় ক্ষোভ উগরে দেন মহিলারা। অন্য আউটডোর সচল থাকলেও, মেডিক্যালের অধীন সদর হাসপাতালে শিশু বিভাগে চিকিৎসকের দেখা নেই, সেব্যাপারে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছেও কোনও উত্তর ছিল না। এতে ক্ষোভের মাত্রা চরমে ওঠে দূরদূরান্ত থেকে অসুস্থ সন্তানদের নিয়ে আসা বাবা-মায়ের। অবশেষে বেলা ১২টার পর চিকিৎসক আসেন। কেন দেরি, তা নিয়ে তিনি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। 


    জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ অবশ্য বলেন, শিশু বিভাগের আউটডোরে একটু সমস্যা হয়েছিল। আসলে যেসব চিকিৎসকের আউটডোরে বসার কথা ছিল, তাঁরা ওয়ার্ডে রোগী দেখছিলেন। এতেই দেরি হয়ে যায়। এমনিতেই সোমবার আউটডোরে ভিড় হয়। তার উপর শনিবারও আউটডোরও হয়নি। সেকারণে এদিন যথেষ্টই ভিড় জমে যায়। তবে ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসকরা ছিলেন। 


    ময়নাগুড়ি থেকে তাঁর সন্তানকে নিয়ে এসেছিলেন অঞ্জলি মণ্ডল। বলেন, সকাল ৯টা থেকে অপেক্ষা করেছি। বাচ্চার প্রচণ্ড জ্বর। অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে বারবার স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে জিজ্ঞাসা করি, ডাক্তার কখন আসবে? তাঁরা জানিয়ে দেন, জানা নেই। অবশেষে বেলা ১২টার পর চিকিৎসক এসেছেন। জলপাইগুড়ির দেবনগরের বাসিন্দা রূপা সরকার বলেন, বাচ্চার জ্বর। সঙ্গে সর্দি-কাশি। বাচ্চাকে স্নান না করিয়ে, না খাইয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সকাল ১০টা থেকে বসে ছিলাম। বেলা ১২টার পর ডাক্তারের দেখা পেয়েছি আউটডোরে। একই অভিযোগ ক্রান্তির কমল বিশ্বাসের। অসুস্থ শিশুকে নিয়ে তিনি পায়চারি করছিলেন আউটডোরের বাইরে। বললেন, এমনিতে গত কয়েকদিন ধরে আউটডোর হয়নি। আগে একদিন এসে ফিরে গিয়েছি। বলা হয়, আউটডোরে ডাক্তার বসবে না। ইমার্জেন্সিতে দেখাতে হবে। সোমবার আবার আসি। কিন্তু ডাক্তারের দেখা পেতে দুপুর পর্যন্ত হাপিত্যেশ করে বসে থাকতে হয়েছে। রোগীর পরিজনদের বক্তব্য, আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে চিকিৎসকরা যে আন্দোলন করছেন, তাতে সায় আছে তাঁদের। কিন্তু, এভাবে দিনের পর দিন চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রেখে আন্দোলন কেন?  ডাক্তার নেই। শিশুদের নিয়ে অপেক্ষায় অভিভাবকরা। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)