• আর কতদিন? চাপে সিবিআই
    বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার ১০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এক সপ্তাহ হল তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। কিন্তু তারা বড়সড় কোনও ‘ব্রেক থ্রু’ করতে পারেনি। তদন্ত এখনও সেই তিমিরে। নৃশংস এই অপরাধের কিনারা করতে আর কতদিন লাগবে? কেন্দ্রের তরফে চাপ বাড়ছে সিবিআইয়ের উপর। এই পরিস্থিতিতে সোমবার অভিযুক্ত সঞ্জয়ের লাই ডিটেকশন বা পলিগ্রাফ টেস্ট করতে চায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। কিন্তু কখন এমন পদক্ষেপ নেয় তদন্তকারী সংস্থা? যখন দীর্ঘ তদন্ত ও জেরার পরও মামলার কোনও কিনারা হয় না। উঠে আসে না নিশ্চিত তথ্যপ্রমাণ। পুলিস, সিআইডি, সিবিআই কিংবা এনআইএ তদন্তের চিরকালীন ইতিহাস সেকথাই বলছে। এবারও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা সেই পথে হাঁটায় সন্দেহ তৈরি হচ্ছে—তাহলে কি আর জি কর কাণ্ডে এখনও মোক্ষম কোনও নতুন তথ্য অধরা? এভাবে তদন্ত অথবা গ্রেপ্তারি দীর্ঘায়িত হলে নাগরিক সমাজের ক্ষোভের আঁচ যে কোনও সময় সিবিআইয়ের দিকেও ঘুরে যাবে বলে শঙ্কায় কেন্দ্র। 


    স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে, তদন্ত কতদূর অগ্রসর হল তা দিল্লিতে বসে জানতে উদগ্রীব শীর্ষ কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। সাধারণ মানুষকে ইতিবাচক কিছু বার্তা না দিতে পারলে ক্ষোভ বাড়বে। এমনকী এবার কেন্দ্রকেও নিশানায় আনা হবে। এই আশঙ্কায় সোমবারও লোদি রোডের সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই সদর দপ্তরের কাছে দফায় দফায় জানতে চাওয়া হয়েছে যে, তদন্তের আপডেট কী? সিবিআই স্বাভাবিকভাবে প্রবল চাপে। কারণ একটাই, নাগরিক সমাজের আন্দোলন এবং রাজনৈতিক দলগুলির টার্গেট ক্রমেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে সরে গেলেও প্রকৃত অপরাধের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং হত্যার পিছনে কারা জড়িত? আর জি করে অনিয়ম নিয়ে সন্দীপ ঘোষকে লাগাতার জেরার পাশাপাশি সর্বাগ্রে জানা দরকার সেদিন রাতে ঠিক কী ঘটেছিল? সবথেকে বড় প্রশ্ন, মোটিভ কী ছিল? শুধুই ধর্ষণ? এবং তারপর হত্যা? নাকি নেপথ্যে রয়েছে অন্য কিছু? এই জ্বলন্ত প্রশ্নগুলি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সত্য মিথ্যা হাজারো জল্পনা এবং ফেক নিউজের রমরমা চলছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত সিবিআইয়ের দিক থেকে কোনও কিনারা হল না কেন? এইসব প্রশ্ন শুধু নাগরিক সমাজের একাংশের নয়, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও সুযোগ বুঝে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছে।


    এই অবস্থায় সিবিআইকে তদন্তের গতি বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে কেন্দ্রের সর্বোচ্চ স্তর থেকে। আর জি কর নিয়ে গোটা দেশে ঘনিয়ে ওঠা পরিস্থিতিতে প্রবল উদ্বেগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। শতবার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও ডাক্তারদের আন্দোলন প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। নাগরিক বিক্ষোভেও রাশ টানা যায়নি। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোনও বিচ্ছিন্ন অপরাধী শ্রেণি আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চক্রান্তে লিপ্ত থাকতে পারে বলে গোয়েন্দারা ‘ইনপুট’ পাচ্ছে।  রাজ্যগুলিকে সতর্ক করাও হয়েছে। যদিও তদন্ত সঠিক পথেই এগচ্ছে বলে কেন্দ্রকে জানিয়েছে সিবিআই। প্রাক্তন অধ্যক্ষ এবং সঞ্জয় রায়কে জেরা করে সূত্র সংযোগের চেষ্টা করছে তারা। তবে যাই হোক, দ্রুত কিনারা চায় অমিত শাহের মন্ত্রক। 
  • Link to this news (বর্তমান)