নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর ইস্যুতে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরোক্ষে প্রাণনাশের হুমকি! এই অভিযোগে সোমবার এক কলেজ ছাত্রীকে গ্রেপ্তার করল কলকাতার তালতলা থানার পুলিস। লেকটাউনের বাসিন্দা বছর তেইশের ওই তরুণীকে রবিবার রাতেই আটক করা হয়। কলকাতা পুলিসের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর গভীর রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানা। যদিও দুপুরের মধ্যে শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন পেয়ে যান তিনি।
কিন্তু কেন এই গ্রেপ্তারি? জানা গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনতার উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়েছিলেন ওই কলেজ ছাত্রী— ‘ইন্দিরা গান্ধীর মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কেউ উড়িয়ে দেয় তো...’। স্বভাবতই এভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাণনাশের প্রচ্ছন্ন হুমকি দেওয়ার বিষয়টি কলকাতা পুলিসের নজরে আনেন এক ব্যক্তি। তার ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্তে নামে তালতলা থানা।
জানা গিয়েছে, মোট তিনটি বার্তা দিয়েছিলেন ওই তরুণী। তার মধ্যে দু’টিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে। তৃতীয়টি ধর্ষিতা চিকিৎসকের পরিচয় সংক্রান্ত। কলেজ ছাত্রী যে ভাষায় বার্তা দিয়েছেন, তাতে জেড প্লাস সুরক্ষার অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লোক খেপানোর মতো রসদ খুঁজে পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তাদের দাবি, ‘ওই বার্তায় কার্যত জনতাকে মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের জন্য প্ররোচিত করা হয়েছিল। পাশাপাশি তাঁকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের ডাক দেওয়া হয়।’ এমনিতেই রাত দখলের লড়াই, টানা বিক্ষোভ সমাবেশ এবং আর জি করে ভাঙচুর নিয়ে তপ্ত কলকাতা। ঠিক এই পরিস্থিতিতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে এহেন প্রচ্ছন্ন হুমকি আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। এই পোস্ট ঘিরে তৃণমূল শিবিরের পাল্টা প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতা থেকে সরে গেলেই কি রাজ্যে খুন-ধর্ষণের মতো অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে?
শুধু তা-ই নয়, ওই কলেজ ছাত্রী আর জি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নিহত চিকিৎসকের পরিচয় ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ। আইন অনুসারে যা গর্হিত অপরাধ। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা বলা রয়েছে, কোনও অবস্থাতে ধর্ষিতার পরিচয় প্রকাশ্যে আনা যায় না। এদিন দুপুরে ধৃত তরুণীকে হাজির করানো হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে। বিচারক অবশ্য শর্তসাপেক্ষে তাঁর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে। আদালত বলেছে, তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে অভিযুক্তকে। তদন্তকারী অফিসার তলব করলে দিতে হবে হাজিরাও।