• ‘আমরা এটাই চাই, আন্দোলনের সঙ্গে স্বাভাবিক থাক পরিষেবাও’, হাসপাতালে এসে বলছেন, রোগী ও পরিজনরা
    বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: তখনও সকাল হয়নি। ভোর প্রায় ৪টে। মুর্শিদাবাদ থেকে শিয়ালদহে স্টেশনে পৌঁছলেন আঙ্গুরা বিবি। সেখান থেকে সোজা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোর। অস্থিরোগ চিকিৎসকের কাছে দেখাতে এসেছিলেন। বাইরে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন চলছে। কিন্তু, সোমবার খোলা ছিল আউটডোরের সব বিভাগ। ডাক্তার দেখিয়ে যখন বের হচ্ছিলেন, তখন বাইরে মানববন্ধন কর্মসূচি করছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আঙ্গুরা বিবির হাতে তাঁরা রাখিও পরিয়ে দেন। তাতে বেজায় খুশি তিনি। সাংবাদিক পরিচয় শুনে বললেন, ‘আমরা এটাই চাই। আন্দোলন যেমন চলছে, চলুক। কিন্তু সঙ্গে স্বাভাবিক থাক রোগী পরিষেবাও।’

    একই কথা মহেশ সাউয়েরও। তিনি অবশ্য কলকাতাতেই থাকেন। হাতের চামড়ার সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন আউটডোরে। চর্মরোগ চিকিৎসক দেখিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরে যান। তিনি বলেন, ‘আমরা তো গরিব মানুষ। সরকারি হাসপাতালই আমাদের ভরসা। আন্দোলনে যদি পরিষেবা ব্যাহত হয়, তাহলে আমরাই হয়রানির শিকার হব। তাই আন্দোলন চলুক। আমাদের পরিষেবাও যেন বজায় থাকে। আজ কোনও সমস্যা হয়নি’।

    রোগী ও রোগীদের আত্মীয়দের কথায়, আন্দোলনের শুরুর দিকে বেশ প্রভাব পড়েছিল আউটডোরে। বহু বিভাগে চিকিৎসক না পেয়ে শত শত রোগী ফিরে যান। কিন্তু, সোমবার স্বাভাবিক ছন্দেই চলল আউটডোর। রোগীদের উপচে পড়া ভিড় না হলেও বহু রোগী এসেছিলেন। প্রায় সকলেই চিকিৎসক দেখিয়ে বাড়ি গিয়েছেন। জরুরি পরিষেবা শুরুর দিন থেকেই চালু রেখেছিলেন মেডিক্যাল অফিসাররা। তবে জুনিয়র চিকিৎসকরা আন্দোলনে বসায় প্রথম দিকে সেখানেও পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন রোগীর আত্মীয়রা। তাঁদের দাবি, এখন জরুরি বিভাগেও কোনও সমস্যা নেই।

    পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে বলে প্রচার শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরাও। রবিবার কলকাতার মেডিক্যালের গেট সহ নানা জায়গায় বড় বড় ব্যানার লাগিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেখানে লেখা, ‘গুজবে কান দেবেন না। হাসপাতালের জরুরি পরিষেবা চালু আছে। আমরা সব সময় মানুষের পাশে আছি। প্রত্যেকটি মানুষের প্রাণ আমাদের কাছে দামি। আমরা কেবল নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে আজ রাস্তায়। আপনারা পাশে থাকুন।’

    আঙ্গুরা বিবি বাড়ি যাওয়ার আগে বললেন, ‘আউটডোরে যাওয়ার সময় কয়েকজন চিকিৎসক বলেন, সব পরিষেবা এখানে চালু ভয় পাবেন না। সব ঠিক আছে। ওঁরাই গেটের সামনে নিয়ে এসে ব্যানারগুলো দেখালেন। তাতে আমারও শান্তি। যদি পরিষেবা না পেতাম, তাহলে এত দূর থেকে আমাকে এসে ফিরে যেতে হতো!’ 
  • Link to this news (বর্তমান)