নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: বাইরে থেকে আর দশটা দিনের সঙ্গে তফাত করা কঠিন। গত কয়েকদিনের মতো সোমবারও হুগলির জেলা হাসপাতাল চুঁচুড়া ইমামবাড়ায় ও শ্রীরামপুরের ওয়ালস হাসপাতালে ছিল উপচে পড়া ভিড়। দু’টি হাসপাতালেই রোগীদের মুখ থেকে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের কথা শোনা যায়নি। অথচ ওই হাসপাতালে চিকিৎসকদের প্রতিবাদ চলছে না, এমন কিন্তু নয়। সুচারুভাবে প্রতিবাদ ও পরিষেবাকে একই সূত্রে গেঁথে ফেলেছেন হুগলির দু’টি বৃহৎ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসরা। ফলে হাসি ফুটেছে রোগীদের মুখে। তাঁরা যেমন জরুরিকালীন পরিষেবা পেয়েছেন তেমনই বহির্বিভাগের পরিষেবাও পেয়েছেন। চিকিৎসকদের ভূমিকাকে সাধুবাদ দিচ্ছে রোগীদের পরিবার।
এই বিষয়ে চিকিৎসকরা কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্কমৌলি কর বলেছেন, ‘আসলে চিকিৎসকদের ভূমিকা বা চাকরি কোনওটাই আর দশটা বিষয়ের সঙ্গে মেলে না। আমজনতার সার্বিক একটি নির্ভরতা চিকিৎসক ও চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি থাকে। তাই চিকিৎসকরা প্রতিবাদ ও পরিষেবা, দু’টি বিষয় নিয়েই সংবেদনশীল ভূমিকা পালন করেছেন।’ পোলবা থেকে সোমবার হাসপাতালে এসেছিলেন মধ্যবয়সী নিতাই দাস। তিনি বলেন, ‘একটু ভিড় ছিল কিন্তু চিকিৎসা পেতে সমস্যা হয়নি।’ হুগলির শ্রমজীবী চিকিৎসা আন্দোলনের কর্মী গৌতম সরকার বলেন, ‘সময়টা বড় অস্থির। এমন সময় চিকিৎসকদের জন্যও সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুব কঠিন। তবুও হুগলির সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’
আন্দোলন থেকে প্রতিবাদ সবই হয়েছে ইমামবাড়া হাসপাতালে। বহির্বিভাগের রোগী দেখা বন্ধ করেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু হাসপাতালে খোলা চাতালে ত্রিপল ঘিরে রোগী দেখেছেন। সোমবারও মিছিল হয়েছে কিন্তু পাল্লা টেনে রোগী দেখাও হয়েছে। জরুরিকালীন পরিষেবাও দিয়েছেন হুগলির প্রাচীনতম চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসকরা। শ্রীরামপুরের ওয়ালস হাসপাতালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। সেখানে চিকিৎসকদের বুকে কালো ব্যাজ ছাড়া বোঝার উপায় ছিল না আন্দোলন চলছে। মানুষও দেদার পরিষেবা পেয়ে চিকিৎসদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। হুগলিতে এভাবে হাত ধরে পাশাপাশি চলেছে প্রতিবাদ আর পরিষেবা।