• ‘কৃতী ছাত্র’ সন্দীপ ঘোষের পরিণতিতে হতবাক বনগাঁ হাইস্কুলের শিক্ষকরা
    বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বনগাঁ: স্কুলে ‘ভালো ছেলে’ হিসেবে যথেষ্ট পরিচিতি ছিল সন্দীপ ঘোষের। তাঁকে ক্লাসে কখনও কারও সঙ্গে অশান্তি বা গোলমাল করতে দেখেননি শিক্ষকরা। বিজ্ঞান প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাঁর সাগ্রহ উপস্থিতি থাকত। বনগাঁ হাইস্কুলের শিক্ষকরা কখনও ভাবেননি, ১৯৮৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রায় ৮০ শতাংশ নম্বর পাওয়া তাঁদের প্রিয় ছাত্র এভাবে খবরের শিরোনামে আসবে! সেসব কথাই বলছিলেন বনগাঁ হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক দেবাশিস রায়চৌধুরীর। ইংরেজির প্রাক্তন এই শিক্ষক বলেন, ‘সন্দীপকে সেই স্কুলে দেখেছিলাম। ৩৫ বছর পর টিভিতে দেখলাম। এই ঘটনা আমার কাছে বিস্ময়ের, বেদনার। সেদিনের সন্দীপের সাথে আজকের সন্দীপের কোনও মিল পাচ্ছি না।’ তাঁর খেদ, ‘উচ্চপদ মানুষকে এতটা নীচে নামায়, কল্পনা করতে পারিনি। একজন প্রিন্সিপালের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্ক তো বাবা-মা ও সন্তানের মতো হওয়া উচিত।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁর ছেলে সন্দীপ ক্লাস সিক্স পর্যন্ত বনগাঁ হাইস্কুলে পড়াশোনা করে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে মাধ্যমিক পাশ করে একাদশ শ্রেণিতে আবার বনগাঁ হাইস্কুলে ভর্তি হন। ১৯৮৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন ৭৯.৭৭ শতাংশ নম্বর নিয়ে। সেবার স্কুলের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছিলেন তিনি। এরপর তিনি ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পান। আজও স্কুলের মেধাবী ছাত্রদের নামের তালিকায় জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম। বনগাঁ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কুণাল দে বলেন, ‘আমি প্রাক্তন শিক্ষকদের কাছে শুনেছি, সন্দীপ ঘোষ স্কুলের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। স্কুলের সেরাদের তালিকায় নামও দেখেছি।’ আর জি কর হাসপাতালের ভয়াবহ ঘটনা সামনে আসার পর সন্দীপের স্কুলের সহপাঠীরাও লজ্জিত ও ক্ষুব্ধ। 

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহপাঠী বলেন, ‘স্কুলে ভালো আবৃত্তি করত। কিন্তু অন্য কেউ ভালো আবৃত্তি করলে বা স্যরদের প্রশংসা পেলে তার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিত। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে কিছু শেয়ার করত না। বাড়িতে বন্ধুরা গেলে তাদের পড়ার ঘরে ঢুকতেও দিত না।’ আরও এক সহপাঠী বলেন, ‘খুবই আত্মকেন্দ্রিক ছিল সন্দীপ। চিকিৎসক হওয়ার পর রোগী ভর্তি করাতে গিয়ে ওর কোনও সাহায্য পাইনি।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)