• যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজ: নবীনবরণে অশ্লীল নাচের অনুষ্ঠান, বহিরাগতদের নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
    বর্তমান | ২০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর-কাণ্ডে তোলপাড় গোটা দেশ। এই আবহে স্নাতকের নতুন ব্যাচের ক্লাস শুরুর আগে নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি ব্যবস্থা নিচ্ছে কলেজগুলি। এর মধ্যেই যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ডে কলেজ তথা ল কলেজের হলে অশ্লীল নাচের অনুষ্ঠান ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে উঠল। সাধারণত গোবলয়ের গ্রামে চটুল বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে যেভাবে ছেলেরা মেয়ে সেজে নাচে, ঠিক সেই কায়দায় একজনকে নাচতে দেখা গিয়েছে কলেজের নবীণবরণ উৎসবে। সেই নাচ ঘিরে ছাত্রদের উল্লাস, উত্তেজনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। অধ্যক্ষ পঙ্কজকুমার রায়ের বক্তব্য, এরকম সংস্কৃতি চলতে থাকলে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যে ঘটবে না, তা হলফ করে বলা কঠিন।


    অধ্যক্ষের দাবি, ঘটনাটি ৭ আগস্টের। তিনি সেই সময় সময় দিল্লিতে ছিলেন। এই অনুষ্ঠানের কোনও অনুমতিও ছিল না। ফিরে এসে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। যে হলঘরে অনুষ্ঠানটি হয়েছে, তা ল কলেজ এবং ডে কলেজ যৌথভাবে ব্যবহার করে। অভিযোগের আঙুল উঠেছে এক ছাত্রনেতার দিকে। ওই নেতা ১০ বছরের চেষ্টায় স্নাতকে উত্তীর্ণ হতে পেরেছেন। তাও কোভিডকালে অনলাইন পরীক্ষার মাধ্যমে। কলেজে ঢোকার ব্যাপারে ওই ছাত্রনেতার উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণেই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তাঁর আরও দাবি, র‌্যাগিং নিয়ে ইউজিসি নির্দেশিত সবরকম কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তবে, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সিসিটিভি বসিয়েও লাভ হচ্ছে না। কারণ, বিশেষ বিশেষ দিনে ইউনিয়ন রুম এবং আরও কয়েকটি এলাকায় বসানো সিসিটিভি ঝাণ্ডা দিয়ে আড়াল করা থাকে। তিনি উচ্চশিক্ষা দপ্তর সহ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের আবেদন জানাতে চলেছেন। এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়নের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।


    তবে বিভিন্ন কলেজ আর জি করের ঘটনার পর বাড়তি সতর্কতা নজরে এসেছে। নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী জানিয়েছেন, র‌্যাগিং বা কোনও ধরনের যৌন হেনস্তা রোখার ব্যাপারে তাঁর বাড়তি উদ্যোগ নিচ্ছেন। এ সংক্রান্ত বিধিবদ্ধ অভিযোগ গ্রহণ ও তদন্তকারী কমিটিগুলি সক্রিয় রাখা হয়েছে। কলেজের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি নজরদারি রয়েছে। এছাড়াও নিরাপত্তাজনিত কোনও আবেদন বা পরামর্শ থাকলে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী বা অভিভাবক—যে কেউ অধ্যক্ষের ঘরে বিশেষ ড্রপবক্সে তা জানাতে পারবেন। মহেশতলা কলেজের অধ্যক্ষ রুম্পা দাস জানান, দু’-তিনদিনের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনার জন্য বৈঠক ডাকা হয়েছে। নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের তরফে কলেজের প্রিন্সিপালদের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে সিসিটিভিতে জোর দেওয়ার পাশাপাশি পুরুষের সমসংখ্যক মহিলা নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করতেও বলা হয়েছে। ক্লাস হয়ে গেলে শ্রেণিকক্ষ তালা দিয়ে রাখা, ক্যাম্পাসে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো আটকানো, ছাত্রীদের আত্মরক্ষার ওয়ার্কশপ করানো ইত্যাদি ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)