রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: বনবাসীদের বন থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। যদি কোনও পরিবারকে বন ছাড়তে হয় তা ঠিক করবে তাঁদেরই তৈরি গ্রামসভা। ২০০৬ সালের ঐতিহাসিক বনাধিকার আইনে তাঁদের স্বার্থরক্ষাতে এই কথা বলা হয়। কিন্তু উত্তরবঙ্গের বনবস্তিগুলোর বাসিন্দারা সেই আইনের সুফল পাচ্ছে না! বনবাসীদের অধিকার খর্ব হচ্ছে। এদিকে আইন প্রয়োগ না হাওয়ায় জঙ্গলের গ্রামগুলোতে উন্নয়ন থমকে রয়েছে, অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামল উত্তরবঙ্গ বন জন শ্রমজীবী মঞ্চ।
মঙ্গলবার বনবস্তিগুলোকে রাজস্বগ্রামে পরিণত করা ও সেখানকার উন্নয়নে বনদপ্তরে অযাচিত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ও সঠিক ভূমির অধিকারের দাবিতে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব বিভাগের ভলকা রেঞ্জ অফিসে বিক্ষোভ দেখান ওই এলাকার বনবস্তির বাসিন্দারা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, গ্রামের উন্নয়নে বনদপ্তর বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দ্রুত এই আইনের প্রয়োগ করে বনবাসীদের সঠিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক। তাঁদের দাবি না মানলে আগামিদিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ বন জন শ্রমজীবী মঞ্চের উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক লাল সিং ভুজেল।
তাঁদের আরও অভিযোগ, বক্সার জঙ্গলে সংরক্ষণের নামে বনদপ্তর বনবাসীদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এছাড়াও তারা জানাচ্ছেন, তাঁরা গতবছরের শেষের দিকে ২০০৬ সালের আইন মোতাবেক বনের অধিকার ফিরে পেতে স্থানীয় এসডিওকে ফর্ম জমা করেন। কিন্তু তার পরে প্রায় একবছর কেটে যাওয়ার পরে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
আন্দোলনকারী সুন্দর সিং রাভা, “এই বক্সার জঙ্গল তফসিলি জনজাতিরদের। সাধারণ মানুষের। ২০০৬ সালের বনাধিকার মোতাবেক জঙ্গল সংরক্ষণের অধিকার রয়েছে গ্রামসভার। আমাদের পূর্বপুরুষেরা যে জঙ্গল তৈরি করেছে তা ফিরে পেতে চাইছি। এই মর্মে আমরা ফর্ম ‘সি’ ফিলাপ করে সাব ডিভিশনাল লেভেল কমিটির যে চেয়ারম্যান অর্থাৎ মহকুমা শাসকের কাছে জমা করি। কিন্তু বছর ঘুরতে এলেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাইনি। বন সংস্কারের নামে বনদপ্তর মানুষকে বক্সা টাইগার থেকে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র করছে। তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। উত্তরবঙ্গ বন জন শ্রমজীবী মঞ্চের পক্ষ থেকে উত্তরবঙ্গের প্রত্যেকে রেঞ্জ অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাব। আমরা আমাদের বন ফিরে পেতে চাই।”