আমরা একে অন্যের খুঁত ধরতে ব্যস্ত, এতে আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি বদলে যাচ্ছে না তো: সুদীপ্তা
আনন্দবাজার | ২০ আগস্ট ২০২৪
শনিবার নাট্যকর্মীদের সঙ্গে পথে নেমেছিলেন মঞ্চ-পর্দার খ্যাতনামী অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। তার পরেই তাঁকে শুনতে হয়েছে, মুখ দেখাতে পথে নেমেছেন তিনি। একা সুদীপ্তা নন, অভিনয় জগতের কমবেশি প্রায় প্রত্যেকেই এই ধরনের কটাক্ষের মুখোমুখি হয়েছেন। বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামীরা পথে নামলে কখনও তাঁদের সাজপোশাক, কখনও তাঁদের আচরণ, উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি— প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে। আরজি কর-কাণ্ডে তাঁদের পথে নামাকে সহজ চোখে দেখছেন না অনেকেই। এ বার বিষয়টি নিয়ে মতামত দিলেন সুদীপ্তা। আনন্দবাজার অনলাইনকে হাসতে হাসতে তিনি বললেন, “আমি নাকি মুখ দেখাতে পথে নামছি! জেনে খুব মজা পেয়েছি। গত ৩০ বছর ধরে তা হলে কী করলাম, যে নিজেকে চেনাতে আন্দোলনকে হাতিয়ার বানাতে হচ্ছে?”
শুধু মৌখিক বার্তা নয়, সমাজমাধ্যমেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুদীপ্তা। লিখেছেন, “এটাই হওয়ার ছিল। মৃতার জন্য বিচার চাইতে গিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম আমরা। ব্যস্ত হয়ে পড়লাম জানতে— তোমার ডিপি সাদা না কালো? তোমার মোমবাতি আগুনের না ব্যাটারির? তুমি শাঁখ বাজালে না উলু দিলে?” অভিনেত্রীর দাবি, আর এ সবের মাঝে পড়ে গুলিয়ে গেল আসল কিছু প্রশ্ন। যেমন, সিবিআই-এর তদন্ত কত দূর এগোল? বিচার কে দেবে? সরকার না সিবিআই? রাজ্যের মহিলা কমিশন এই তদন্ত চাইবার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনও ভুমিকা পালন করবে কি না? কিংবা খেলার মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে যাঁরা ইতিহাস গড়লেন, পরের খেলায় আবার তাঁরা যুযুধান পক্ষ হয়ে গ্যালারি থেকে একে অন্যের মা-বোনের সম্মানহানি করে কুকথায় মাতবেন কি না? কারণ, সুদীপ্তার মতে, এগুলোই আসল প্রশ্ন।
আনন্দবাজার অনলাইনকে এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বললেন, “আমাকে কে কী বলল, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাই না। কটাক্ষকে পাত্তা দিই না। কারণ, আমাকে এখনও পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দলের মঞ্চে দেখা যায়নি। আমার ভয় অন্য জায়গায়। এ ভাবে আমরা একে অন্যের খুঁত ধরতে ধরতে নিজেদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হচ্ছি না তো?” তাঁর আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে আন্দোলন দিগ্ভ্রষ্ট হয়ে যাবে না তো? পাশাপাশি, তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রথম দিনের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। আশা, নির্যাতিতা ন্যায়বিচার পাবে। সিবিআই যোগ না ঘটলে মামলা এত দ্রুত আদালতে উঠত? জবাবে সুদীপ্তার মত, দ্রুত গতিতে তদন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চেয়েছেন। তিনিও সিবিআই তদন্তের কথা বলেছিলেন।