‘পুলিশ দুর্নীতিগ্রস্ত, মানুষের বিশ্বাস হারিয়েছে রাজ্য সরকার’, দিল্লি থেকে বাংলায় ‘গোলাবর্ষণ’ রাজ্যপালের
আনন্দবাজার | ২০ আগস্ট ২০২৪
‘রাজ্য সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়েছে বাংলার মানুষ’। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আরজি কর-কাণ্ডের পর সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই ঘটনা সমাজের কাছে সবচেয়ে লজ্জাজনক মুহূর্ত।’’ শুধু তা-ই নয়, তাঁর নির্দেশে আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে রাজভবনে একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।
মঙ্গলবার দিল্লিতে সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানিয়েছেন, কলকাতার আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। মৃতার ন্যায়বিচারের দাবিতে সম্প্রতি মিছিল করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে বক্তৃতাও করেন। সে প্রসঙ্গে টেনে মঙ্গলবার রাজ্যপালের প্রশ্ন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই সব ভাষণ নানা অলঙ্কারে খচিত। তবে এই ঘটনায় তাঁর সামগ্রিক অবস্থান কী?’’
অন্য দিকে, আরজি কর-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের শুনানি নিয়ে বাংলার রাজ্যপালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ শুনে দেশ স্বস্তি পেল।’’ প্রতিক্রিয়াতেও অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্যপাল বোস।
সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে বাংলার অবস্থা উদ্বেগজনক। ছাত্ররা সরকারের উপর বিশ্বাস হারিয়েছেন, যুবকেরা ভীতসন্ত্রস্ত, আর মহিলারা রয়েছেন হতাশায়। নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে সরকারের ভূমিকা নিয়েই। সাম্প্রতিক ঘটনাটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সরকারের গাফিলতি।’’ কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। তাঁর মতে, কলকাতা পুলিশ ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ এবং ‘রাজনৈতিক মদতপুষ্ট’।
সেই সঙ্গে মঙ্গলবার থেকেই রাজভবনে বিশেষ একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছেন রাজ্যপাল। আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষ ০৩৩২২০০১৬৪১ এবং ৯২৮৯০১০৬৮২— এই দু’টি নম্বরে ফোন করে মতামত জানাতে পারবেন। কন্ট্রোল রুম থেকে মঙ্গলবার সকালে প্রথম ফোনটি করেন রাজ্যপাল স্বয়ং। নিহত তরুণীর বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, আর জি কর-কাণ্ডের পরে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে উপাচার্যদের নির্দেশ দিয়েছিলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল। বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখাও করেন।