জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আরজি কর-কাণ্ডে প্রাক্তন প্রিন্সিপালের পাশাপাশি কলকাতা পুলিস কমিশনারকেও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেমিনার রুম সংলগ্ন ঘরের দেওয়াল কেন ভাঙা হল? এমনকি ঘটনার ৩ দিন পর স্নিফার ডগ ব্যবহার করা হয় বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। সেই টুইটের প্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়কে তলব করে লালবাজার। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা দিতে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন তৃণমূল সাংসদ। বরং গ্রেফতারি এড়াতে দ্বারস্থ হন হাইকোর্টের। এবার দলীয় সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়কে সেই টুইট ডিলিট বা প্রত্যাহার করার প্রস্তাব রাজ্যের। জানা গিয়েছে, টুইট ডিলিট করতে রাজি তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। ওদিকে কোর্টে রাজ্যের আশ্বাস, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। আগামিকাল রয়েছে শুনানি।
ওদিকে দলীয় সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের পর, এবার একই পথে হেঁটে তৃণমূলের উপর চাপ বাড়ালেন রাজ্যসভার আরেক সাংসদ জওহর সরকার। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, "প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের আমলে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তে সরকার সিট গঠন করেছে জেনে খুশি হলাম। তবে এটা আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল। তাঁকে অবিলম্বে চাকরি থেকেই বরখাস্ত করা হোক।" প্রসঙ্গত, সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে, বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর।
জানা গিয়েছে, সোমবার সন্দীপের বিরুদ্ধে টালা থানায় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করেন স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিব। তার ভিত্তিতেই আইজি পদমর্যাদার এক অফিসারের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের সিট গঠন করা হয়। সন্দীপের বিরুদ্ধে তদন্ত করে, এক মাসের মধ্যে সিটকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভূরি ভূরি। বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট বিক্রির অভিযোগ। ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, গ্লাভস, স্যালাইন বোতল বাংলাদেশি নাগরিকের কাছে বিক্রির অভিযোগ! স্নাতক স্তরের স্কিল ল্যাব তৈরির বরাতে দুর্নীতির অভিযোগ।
২০২২ সালে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট স্কিল ল্যাব তৈরির জন্য, একটি সংস্থার সঙ্গে প্রায় ৩ কোটি টাকার চুক্তি করে আরজি কর কর্তৃপক্ষ। অথচ ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যালে একই ল্যাব তৈরি করতে খরচ পড়ে মাত্র ৬১ লক্ষ টাকা। ২০২১ সালে কোভিডের সময় আরজি করে ৪.৩ লাখ টাকা খরচ করে একটি যন্ত্র কেনা হয়। ওই একই যন্ত্র বেসরকারি হাসপাতাল কেনে দেড় লক্ষ টাকায়। যন্ত্র কেনাতেও দুর্নীতির অভিযোগ। সব কাজেই কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ। টেন্ডার পিছু ২০ শতাংশ কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে।