তিনি ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের ‘ঘনিষ্ঠ’, তাঁর নাম অনুপ দত্ত। তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে গাড়ি থেকে নামতে দেখেই তাঁর দিকে ছুটে যান সাংবাদিকেরা। ধৃত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলেই দৌড় শুরু করে দেন ওই এএসআই। প্রাণপনে ছুটে যান সোজা সিজিও কমপ্লেক্সের ভিতরে। এবার তাঁর সম্পূর্ণ পরিচয়ে আসা যাক। সিবিআইয়ের নজরে আসতেই এএসএই অনুপ দত্তকে সিবিআই তলব করেছে। জানা গিয়েছে, পুলিশের ফোর্থ ব্যাটেলিয়নের বারাকে এই অনুপের সঙ্গেই থাকতেন সঞ্জয়। সেদিনের ঘটনার পর এই পুলিশ কর্মীকেই ফোন করেছিলেন সঞ্জয়। তাহলে কি অনুপই সঞ্জয়ের ‘গডফাদার’ ছিলেন? এরই উত্তর খুঁজছে সিবিআই।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে গত ১০ অগস্ট কলকাতা পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করে। পরে সিবিআই তদন্তভার পেলে তাঁকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ধৃতের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করছে সিবিআই। সেই সূত্রেই তাঁর পরিচিত লোকজনকে তলব করছেন তদন্তকারীরা। প্রায় রোজই কেউ না কেউ আরজি কর-কাণ্ডে হাজিরা দিচ্ছেন সিবিআই দফতরে। মঙ্গলবার ডেকে পাঠানো হয়েছিল ওই এএসআইকে। কিন্তু ওই এএসআই ধৃত ব্যক্তি বা আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি ছিলেন না। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা দেখেই দৌড় শুরু করেন ওই পুলিশ আধিকারিক। কিন্তু কেন? তাহলে জবাবদিহি করার ভয়েই কি ওই পুলিশকর্মী দৌঁড়ে পালালেন? প্রশ্ন উঠছে। সূত্রের দাবি, ৮ আগস্ট সেই অভিশপ্ত রাতে অনুপকেই ফোন করেছিলেন সঞ্জয়। সেই রাতে কী কথা হয়েছিল দুজনের? আরজি করের নৃশংসতার কথা কি পুলিশ কর্মীকে ফোনে জানিয়েছিলেন সঞ্জয়? তাঁর প্রশয়েই কি রাতে পুলিশ বারাকে ফিরে ঘুম দিয়েছিলেন সঞ্জয়? এই সমস্ত প্রশ্ন উত্তর অনুপের থেকে জানার চেষ্টা করছে সিবিআই। সঞ্জয় এবং অনুপের সম্পর্কটা এবার একটু বিশ্লেষণ করা যাক। ২০১৯ সালে ধৃত সঞ্জয় সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজে যোগ দিয়েছিলেন। সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও তিনি যে বেশ প্রভাবশালী ছিলেন, তার কিছু প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে প্রথমে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে সেখানে অল্প কয়েকদিন কাজ করার পরেই তাঁকে পাঠানো হয় পুলিশের ওয়েলফেয়ার কমিটিতে। একজন সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও অভিযুক্ত কীভাবে পুলিশের ওয়েলফেয়ার কমিটিতে ছিলেন, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। সিজিও কমপ্লেক্সে মঙ্গলবার যে এএসআই দৌড়ে ঢুকেছেন, তিনিও পুলিশ ওয়েলফেরার কমিটির সদস্য বলেই সূত্রের খবর। তাহলে কি গোড়ায় গন্ডগোল? এবার পুলিশ ওয়েলফেরার কমিটির উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে পারে সিবিআই।