এই সময়: পুলিশের উপর আক্রোশের জেরেই আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল বলে ঘটনার ৬ দিন পরে দাবি করল লালবাজার। কলকাতা পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের জেরা করে জানা গিয়েছে, আগাম পরিকল্পনা করে সে রাতে হামলা চালানো হয়েছিল আরজি করে। ধৃতরা জেরায় দাবি করেছেন, তরুণী চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা দেখতে পেয়ে তারা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সেই রাগ থেকেই হাসপাতালে ভাঙচুর করা হয়।পুলিশ সূত্রে খবর, আরজি করে সেদিন রাতে হামলাকারীদের কেউ কেউ বেহালা থেকেও বাসে করে হাজির হয়েছিলেন। আবার লেকটাউন, শ্যামবাজার, বাগবাজার, পাইকপাড়া, বেলগাছিয়া এলাকায় ‘রাত দখল’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে অনেকে হেঁটেও আরজি কর হাসপাতালের সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন।
এমনকী, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা কিছু লোকজনও সেদিন হামলার জন্য হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়েছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। গত বুধবার রাতে হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫টি মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এরমধ্যে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে তিনটি এবং বাকি দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে আরজি করের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল এবং সেখানকার পড়ুয়াদের অভিযোগের ভিত্তিতে।
এর পাশাপাশি প্রায় একশো জন ডাক্তারি পড়ুয়া মেল করে পুলিশকে জানিয়েছেন, বাইরের অনেকে সেদিন তাঁদের উপর হামলা করার জন্যই হাসপাতালে এসেছিলেন। তবে, হামলার ঘটনায় হাসপাতালের কোনও রোগী কিংবা তাঁদের আত্মীয়দের জখম হওয়ার খবর তাঁদের কাছে জমা পড়েনি বলে দাবি লালবাজারের।
পুলিশ জানিয়েছে, তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে টালা থানায়। বাকি দুটি উল্টোডাঙা এবং শ্যামপুকুরে। লালবাজারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনার তদন্তে নেমে টাওয়ার ডাম্পিং প্রযুক্তি, সিসিটিভি এবং সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া ছবির ভিত্তিতে ৯৬৭ জনকে ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৬৩ জনকে নোটিস পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ১৫৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩৭ জনকে। সূত্রের খবর, এখনও পুলিশের নজরে রয়েছেন আরও ১০-১২ জন। এদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন কলকাতা পুলিশের কর্মীরা।