• বৃষ্টির ঘাটতি মেটায় বাঁকুড়ায় গতি আমন চাষের, ৯৬ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ
    বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: গত কয়েকদিনের বর্ষণে বাঁকুড়া জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি অনেকটাই মিটে গিয়েছে। তারফলে জেলায় আমন চাষ গতি পেয়েছে। ইতিমধ্যে জেলায় ৯৬ শতাংশ জমিতে আমন ধান রোয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। আগস্ট মাসের মধ্যে বাকি জমিতেও ধান রোয়ার কাজ হয়ে যাবে বলে কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা আশা করছেন। নিম্নচাপ না হলে সমস্যার সমাধান হতো না বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। 

    বাঁকুড়ার উপ কৃষি অধিকর্তা(প্রশাসন) নারায়ণচন্দ্র মণ্ডল বলেন, এবার আমন মরশুমে জেলার ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তারমধ্যে ৩ লক্ষ ২২ হাজার ৮৯৮ হেক্টর জমিতে ধান রোপণের কাজ হয়ে গিয়েছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৬ শতাংশ। বাকি জমিতেও চলতি মাসের মধ্যে ধান রোয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, বাঁকুড়া জেলায় মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ৯৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এবছর মে মাস থেকে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৮০৮.৫মিলিমিটার। এখনও এমাসে দিন দশেক বাকি রয়েছে। ফলে বাকি বৃষ্টির ঘাটতিও মিটে যাবে। ফলে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আমন চাষের শুরুটা ভালো হয়েছে।

    গত কয়েক বছর ধরেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আমন মরশুমের প্রথম দিকে বৃষ্টি ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাঁকুড়া সহ রাঢ়বঙ্গের জেলাগুলিতে ওই ঘাটতি ক্রমশ প্রকট হয়েছে। তার ফলে আমনের বীজতলা তৈরির কাজ অনেকাংশে ব্যাহত হয়েছে। বিলম্বিত বর্ষার কারণে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে অতিবর্ষণ হলেও তা চাষের কাজে লাগছে না। উল্টে রোপণ করা ধানের চারা অতিবৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এবারও জুন-জুলাই মাসে বৃষ্টির ঘাটতি ৫০শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত ‘স্লগ ওভারে’ বর্ষা কার্যত চুটিয়ে ব্যাট চালায়। সেকারণে আমন চাষও লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। 

    বিষ্ণুপুরের জন্তা গ্রামের বাসিন্দা তথা আমন চাষি অতিব কুণ্ডু বলেন, এবার মহকুমার প্রতিটি ব্লকেই ভালো বৃষ্টি হয়েছে। ফলে চাষবাস ভালো হয়েছে। জমিতে ভালো সেচ দেওয়া গেলে ফলনও আশানুরূপ হবে। সোনামুখীর ইসবপুরের বাসিন্দা উমাপদ ঘোষ বলেন, গতবার খরা পরিস্থিতির কারণে আমাদের এলাকার উঁচু জমিগুলিতে ধান রোয়া যায়নি। অনেকের বীজতলা জলের অভাবে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। এবারও প্রথম দিকে বৃষ্টি না হওয়ায় চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পরে অবশ্য নিম্নচাপের বৃষ্টি গোটা মরশুমের ঘাটতি পুষিয়ে দেয়। আমি মোট ছ’বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি। আশা করি ফলন ভালো হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)