• গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব জিইয়েই রেখে পাঁচটি স্থায়ী সমিতি গঠন
    বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার খানাকুল-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি। আগেই সেখানকার স্থায়ী সমিতির সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন কয়েকজন। ফলে ছ’টি স্থায়ী সমিতির পদ ফাঁকা হয়ে যায়। তাতে অচলাবস্থা পরিস্থিতি তৈরি হয়। মঙ্গলবার আরামবাগ মহকুমা শাসকের অফিসে ইস্তফা দেওয়া পদে স্থায়ী সমিতি নতুন করে গঠন করা হল। বিগত দিনে খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল, মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। তাই এদিন পুলিস আগেভাগেই সতর্ক ছিল। মহকুমা শাসকের কার্যালয় নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়। এসডিও অফিসের সামনে দিয়ে যান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি রাখে পুলিস। একাধিক প্রান্তে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে রাখা হয়। তবে এদিনও রাজনৈতিক চাপানউতোর দেখা যায়। স্থায়ী সমিতি গঠন ঘিরে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর সদস্যরা এসডিও অফিসে আসেননি। এমনকী, বিরোধী সদস্যরাও হাজির হননি। তবে স্থায়ী সমিতি গঠনে তাঁদের অনুপস্থিতি কোনও প্রভাব ফেলেনি। 

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থায়ী সমিতিতে ৫৮ জন সদস্য রয়েছেন। এদিন তারমধ্যে ৩২জন হাজির ছিলেন। বৈঠকে প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন খানাকুল-১ এর বিডিও শুভজিৎ দাশগুপ্ত। বিডিও বলেন, এদিন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্থায়ী সমিতির ইস্তফা দেওয়া পদ পূর্ণ হয়েছে।

    উল্লেখ্য, খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতিতে দীর্ঘদিন ধরেই নানা টালবাহানা চলছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, সেখানে শেখ নইমূল হক ওরফে রাঙা গোষ্ঠীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব রয়েছে দলের ব্লক সভাপতি দীপেন মাইতি গোষ্ঠীর। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে সহ সভাপতি ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, দু’টি পদেই ছিলেন রাঙা। তা নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত। দলের নির্দেশে রাঙা সহ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। একইসঙ্গে দলীয় কোন্দলের জেরে ব্লক সভাপতির অনুগামী পঞ্চায়েত সমিতির কয়েকজন সদস্য স্থায়ী সমিতি থেকে ইস্তফা দেন। যদিও তাঁরা ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন বলে প্রশাসনকে জানান। 

    এদিন স্থায়ী সমিতির ফাঁকা পদগুলি পূরণ করতে নির্বাচনের দিন স্থির করে মহকুমা প্রশাসন। সেইমতো এদিন স্থায়ী সমিতি গঠিত হয়। এদিনের বৈঠকে অবশ্য রাঙা সহ তাঁর অনুগামীরা হাজির হননি। খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মাইতি বলেন, পাঁচটি স্থায়ী সমিতির শূন্য পদ এদিন আইন মেনে পূরণ করা হয়েছে।

    নইমুল হক ওরফে রাঙা বলেন, দলের নির্দেশ না থাকায় এদিন বৈঠকে যাইনি। খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা বিজেপির অখিল জানা বলেন, এদিনের বৈঠকে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। তাই যাইনি। তবে তৃণমূলের কোন্দলের জেরে এলাকায় উন্নয়ন হচ্ছে না। 

    ব্লক তৃণমূল সভাপতি বলেন, বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। খানাকুলে উন্নয়নের কাজ সমানতালে চলছে। দলে গোষ্ঠীকোন্দল নেই। এদিন অধিকাংশ সদস্যই বৈঠকে হাজির হন। শিক্ষার স্থায়ী সমিতি প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মতো পরে গঠিত হবে। তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় বলেন, বিষয়টি প্রশাসনিক। তাই এখানে দলের কোনও ব্যাপার নেই।
  • Link to this news (বর্তমান)