• স্ত্রীর সামনে স্বামীকে শুঁড়ে তুলে আছাড়
    বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: মঙ্গলবার সকালে ঝাড়গ্ৰাম ব্লকের লেদাবহড়া গ্ৰাম পঞ্চায়েত এলাকার আঁধারশোল গ্ৰামে হাতির হানায় এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম খগেন পাতর(৪৬)। স্ত্রীর সামনেই বুনো হাতি শুঁড় দিয়ে তাঁকে আছড়ে মারে। এই নিয়ে ঝাড়গ্ৰামে পাঁচদিনে হাতির হানায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ফের মৃত্যুর পরই বনবিভাগের আধিকারিকদের ঘিরে ধরে গ্ৰামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। হাতির হানায় একের পর এক মৃত্যুতে বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

    প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাসাগর পল্লিতে হাতির দল ঢুকে পড়েছিল। স্বাধীনতা দিবসের সকালে হাতির হানায় এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু ঘিরে শহরে আতঙ্ক ছড়ায়। পসরো গ্ৰামে তার একদিন পরে হাতির হানায় ফের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। জেলায় হাতির হানায় মৃত্যু থামছেই না। আঁধারশোল গ্ৰামের বাসিন্দাকে এবার স্ত্রীর চোখের সামনে বুনো হাতি শুঁড় দিয়ে আছড়ে মেরেছে। সাতসকালে এই মৃত্যুর ঘটনায় গ্ৰামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বনদপ্তরের আধিকারিকরা গ্ৰামে গেলে তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। মৃতের পরিবারকে পাঁচদিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তোলেন। লেদাবহড়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গোপাল মুর্মু বলেন, হাতির দল মাঝেমধ্যেই জঙ্গল সংলগ্ন গ্ৰামগুলোতে হানা দিচ্ছে। পরপর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। বনদপ্তর হাতির হানা ঠেকাতে পারছে না। এখন চাষবাসের সময়। সকাল হলেই চাষিরা মাঠে যাচ্ছেন। কারণ সেখানে না গেলে চাষাবাদ হবে না। আবার চাষের জন্য জমিতে গেলে ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। গ্ৰামবাসীদের দাবি, পাঁচ লক্ষ টাকার বদলে ক্ষতিপূরণ ৫০ লক্ষ টাকা করতে হবে। হাতির হানায় মৃত পরিবারের সদস্যদের দ্রুত চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গ্ৰামের এক বাসিন্দা রবীন্দ্র বাস্কে বলেন, সকালে স্ত্রী বাড়ির বাইরে বের হয়েছিল। গ্ৰামে হাতি এসেছে শুনে স্ত্রীকে খুঁজতে বের হই। বাইরে বেরিয়ে দলছুট একটি হাতির সামনে পড়ে যাই। পঞ্চাশ মিটার দূর থেকে হাতিটি আমার দিকে তেড়ে আসে। দৌড়ে পালানোয় অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছি। গ্ৰামের অপর এক বাসিন্দা আনন্দ মাহাত বলেন, শহরে হাতি ঢোকা আটকাতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

    কিন্তু গ্ৰামের ক্ষেত্রে সেইরকম কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। হাতির হানায় বারবার মানুষ মারা যাচ্ছে। তারপরও বনদপ্তরের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। মৃতের স্ত্রী কাজল পাতর বলেন, সকাল ৬টার সময় আমার স্বামী ঘর থেকে বের হয়েছিল। হাতির গ্ৰামে ঢোকার খবর পেয়ে আশঙ্কা নিয়ে বাইরে স্বামীকে খুঁজতে যাই। চোখের সামনে হাতিটি আমার স্বামীকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। শেষ কথাটুকু পর্যন্ত বলতে পারেনি। মেয়ে ও ছেলে নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়লাম। ঝাড়গ্ৰাম ডিভিশনের বনদপ্তরের আধিকারিকরা এই ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন। 

    ডিএফও উমর ইমামকে এবিষয়ে জানতে ফোন করা হলেও তোলেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।
  • Link to this news (বর্তমান)