তৃণমূল নেতা বাপী রায় খুনে গ্রেপ্তার দলেরই প্রভাবশালী সহ আরও ২ কর্মী
বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা, ইসলামপুর: ইসলামপুরে তৃণমূল নেতা বাপী রায়ের শ্যুটআউট কাণ্ডে পুলিসের জালে এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ও দুই দলীয় কর্মী। শ্যুটারদের স্থানীয়স্তরে সাহায্য করার অভিযোগে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মেহমুদ আলম রামগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের ভাতগাঁ এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া মঞ্জুর আলম ও সাহিদ আলম রামগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের কলতাহার এলাকায় থাকেন।
গত ১৩ জুলাই রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ইসলামপুর থানার মাদারিপুর এলাকায় ৩১ নং জাতীয় সড়কের ধারে একটি লাইন হোটেলে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন ইসলামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলের লিপি বিশ্বাস রায়ের স্বামী তথা তৃণমূল নেতা বাপী রায় (৪০)।
তদন্তে নেমে পুলিস প্রথমে বিধাননগর এলাকার যুবক অনিকেত সরকারকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সম্প্রতি মুক্কারাম রাহি নামে এক শ্যুটারকে ধরেছিল। এবার মুক্কারামের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। সবমিলিয়ে শ্যুটআউট কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা হল পাঁচ।
ইসলামপুর কোর্টের সরকারি আইনজীবী সঞ্জয় ভাওয়াল বলেন, ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মুক্কারাম রাহি পুলিস হেফাজতে আছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। খুনের ঘটনায় এই তিনজনের ভূমিকা ছিল।
খুনের ঘটনায় দলের নেতা, কর্মীরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁদের রাজনৈতিক পদ নিয়ে ভিন্ন কথা বলছে নেতৃত্ব। রামগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান চন্দন দাস বলেন, মেহমুদ দলের অঞ্চল কনভেনার। বাকি দু’জন বুথস্তরের কর্মী।
উল্টোদিকে, রামগঞ্জ ২ অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ইদ্রিস আলমের মন্তব্য, মেহমুদ দলের কোনও পদে নেই। তবে তৃণমূল করে। বাকি দু’জন সাধারণ ভোটার।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, ধৃত মেহমুদ রামগঞ্জের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তিনি ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরীর গোষ্ঠীতে ছিলেন। রামগঞ্জ ২ অঞ্চল তৃণমূল কনভেনার হওয়ার পর দলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল ও ব্লক সভাপতি জাকির হুসেনের গোষ্ঠীতে চলে যান। তখন থেকে অঞ্চল কমিটির পদে না থাকলেও দলের একাধিক কর্মসূচিতে ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে সামনের সারিতে থাকতেন মেহমুদ।
ইসলামপুর পুলিস জেলার এসপি জবি থমাস বলেন, একজন শ্যুটারকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের ঘটনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য জানতে পেরেছি। মঙ্গলবার ধৃতরা বাপীকে খুন করতে স্থানীয়ভাবে সাহায্য করেছিল। সেদিনের ঘটনায় দু’জন মাস্টারমাইন্ড আছে। তাদের নাম পেয়েছি। তবে, তারা ইসলামপুরের বাইরের লোক। বাকিরাও শীঘ্রই গ্রেপ্তার হবে।