‘অভয়া’র মৃত্যুর খবর কে দিয়েছিল, তদন্ত শুরুর এক সপ্তাহ পরও অন্ধকারে সিবিআই
বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ প্রথম কে দেখেছিল? প্রথম খবর কে দিয়েছিল? তদন্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। অথচ এই ব্যক্তিই এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে! ধর্ষণ-খুনের তদন্ত হাতে নেওয়ার পর সাতদিন কেটে গেল, এখনও এই ব্যক্তিকে খুঁজে পায়নি সিবিআই। ওই বিল্ডিংয়েরই কেউ যে এই কাজটি করেছিলেন, সে ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত। কিন্তু তিনি কে? অন্ধকারে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এই বিষয়ে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সহ একাধিক ব্যক্তিকে জেরা করেও সুনির্দিষ্ট তথ্য হাতে আসেনি তদন্তকারী অফিসারদের। আর জি করে অভিযুক্ত সঞ্জয়কে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ এখনও করা যায়নি। এখানেই শেষ নয়, লাই ডিটেক্টর পরীক্ষার সম্মতির জন্য মঙ্গলবারই ধৃত সিভিককে শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল সিবিআইয়ের। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সেই ‘কর্মসূচি’ও পিছিয়ে দিয়েছে তারা। কবে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে, সেটাও নিশ্চিত করা হয়নি।
আর জি কর কাণ্ডের তদন্ত কলকাতা পুলিসের হাত থেকে বেরিয়ে সিবিআইয়ের কাঁধে চাপার পরও ন্যায়বিচার চেয়ে আন্দোলন স্তিমিত হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা, এই বিক্ষোভ শুধু কলকাতায় থেমে নেই, ছড়িয়ে পড়েছে দেশের নানা প্রান্তে। ফলে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ছে। কারণ, বিরোধীরা এরই মধ্যে এজেন্সির ‘ঢিলেমি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। সুপ্রিম কোর্টও আগামী কাল, বৃহস্পতিবার তদন্তের স্টেটাস জানানোর নির্দেশ দিয়েছে সিবিআইকে। অথচ, অন্ধকার কাটছে না তদন্তকারীদের। এখনও তাঁরা কলকাতা পুলিসের তদন্তে ফাঁক খুঁজছেন। সিবিআইয়ের প্রশ্ন, ঘটনাস্থলে যাওয়া অফিসার কেন অধ্যক্ষ বা সেই মুহূর্তে হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি? তাঁদের না পাওয়া গেলে হাসপাতালের অ্যাটেন্ডিং ডাক্তারের বয়ান রেকর্ড করে অজ্ঞাত পরিচয়ের বিরুদ্ধে খুন ও ধর্ষণের কেস রুজু করাটাই তাঁর কর্তব্য ছিল। তা করা হয়নি কেন? এখনও এর উত্তর খুঁজছে সিবিআই। এক্ষেত্রে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ কলকাঠি নেড়েছিলেন কি না, এটাই এখন তাঁদের তদন্তের অন্যতম অভিমুখ। তবে এই বিষয়ে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সিবিআইকে জানিয়েছেন, তিনিই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পুলিসের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের ভিতর পুলিসের আউটপোস্ট নিয়েও। তাই সেখানকার পুলিস কর্মীদের ডিউটি, ২৪ ঘণ্টা কীভাবে হাসপাতাল চত্বর রাউন্ড দেওয়া হয় এবং ঘটনার রাতে ওই বিল্ডিংয়ে কখন তাঁরা ঢুকেছিলেন, এই প্রশ্নও করা হয়েছে রক্ষীদের। চিকিৎসক তরুণীর মৃত্যুর খবর কে বা কারা আউটপোস্টে দিল, তা জানতে সেদিনকার জিডি বুক সিবিআই বাজেয়াপ্ত করেছে বলে খবর।