• রান্নার গ্যাসের প্লান্টে ধুন্ধুমার, ধর্মঘটের পথে ডিলাররা? এলপিজি সঙ্কটের শঙ্কা
    বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও সংবাদদাতা, কল্যাণী: রান্নার গ্যাস নিয়ে আচমকাই ঘনিয়ে উঠেছে আশঙ্কার কালো মেঘ! কল্যাণীতে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের বটলিং প্লান্টের গেটে গত দু’মাস ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (বিএমএস)। কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ের নেতৃত্বে চলছে বিক্ষোভ। মঙ্গলবার সেখানে বিধায়কের উপস্থিতিতেই ডিস্ট্রিবিউটর এবং ডিলারদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ডিস্ট্রিবিউটররা জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে কোনও সুরাহা না হলে এবং প্লান্টে স্বাভাবিকতা না ফিরলে তাঁরা ধর্মঘটে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। দু’মাস ধরে প্লান্টের সামনে টানা বিক্ষোভের জেরে অল্পবিস্তর ব্যাহত হয়েছে পরিষেবা। এখনই গ্রাহকরা গ্যাস অর্ডার করলে চার-পাঁচ দিনের মাথায় সিলিন্ডার পাচ্ছেন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই ‘ব্যাকলগ’ ১০ দিনও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটররা ধর্মঘটে গেলে রান্নার গ্যাসের সঙ্কট দেখা দেবে বলে আশঙ্কা।  

    প্রসঙ্গত, দুর্নীতি, শ্রমিক শোষণ ও বঞ্চনা, কর্মী ছাঁটাই, বেআইনিভাবে লোক নিয়োগের প্রতিবাদে দু’মাস ধরে বিক্ষোভ চলছে প্লান্টের গেটে। ইতিমধ্যে নদীয়া, হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনার বড় অংশে এই পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে। ডিস্ট্রিবিউটররা গ্যাস সিলিন্ডার না পাওয়ায় গৃহস্থের কাছে তা সময়ে পৌঁছে দিতে পারছেন না। গ্রাহকদের ক্ষোভ বাড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সমস্যার সমাধান করতে এদিন ডিস্ট্রিবিউটরদের একটি প্রতিনিধি দল প্লান্টে যায়। অভিযোগ, তাঁদের গেটেই আটকে মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ডিস্ট্রিবিউটরদের আরও অভিযোগ, গোটা ঘটনাটি ঘটেছে বিধায়কের সামনে। আন্দোলনকারীদের পাল্টা অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক শোষণ চলছে এখানে। ইন্ডিয়ান অয়েলের তরফে একজন শ্রমিক পিছু মজুরি প্রায় ৯০০ টাকা দেওয়া হলেও ঠিকাদার তাঁদের মাত্র ৪০০ টাকা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। চলছে বেআইনিভাবে কর্মী নিয়োগ। বিধায়কের দাবি, এসব দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনায় বসার কথা বলা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু আধিকারিকরা বসছেন না। উল্টে আন্দোলন করার ‘অপরাধে’ নতুন করে আরও ৫৭ জন ড্রাইভারকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারই প্রতিবাদে আন্দোলন আরও জোরদার হয়। তবে এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের কল্যাণী ইউনিট কর্তৃপক্ষেরক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিধায়কের আরও দাবি, ‘এদিন ডিস্ট্রিবিউটরদের কেউ মারেনি। তাঁরা জোর করে প্লান্টে ঢুকতে চাইছিলেন এক অভিযুক্ত আধিকারিককে নিয়ে। আমরা বাধা দিই। সেই সময় গাড়ির বনেটে কেউ হাত দিয়ে ঠেলা মারতে পারে। কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ইচ্ছে করে ক্রাইসিস তৈরি করে রাখছে। অথচ উৎপাদন এবং সরবরাহ সবকিছুই স্বাভাবিক। এ বিষয়ে নদীয়া ডিস্ট্রিক্ট ইন্ডেন এলপিজি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা তথা রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘বিধায়ক পয়সা নেওয়ার জন্য এসব করছেন। মানুষকে ভুগতে হচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে বলব কড়াভাবে বিষয়টি দেখতে।’
  • Link to this news (বর্তমান)