• অরুণা শানবাগের ঘটনা মনে করালেন প্রধান বিচারপতি
    বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৪
  • নয়াদিল্লি: আর জি করের ‘তিলোত্তমা’-ই প্রথম নন। হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় চিকিৎসাকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার নজির আগেও রয়েছে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর মামলার শুনানির সময়ে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সেই গা হিম করা কাহিনির উল্লেখ করেছেন। দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরেছেন ১৯৭৩ সালে মুম্বইয়ের কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল (কেইএম) হাসপাতালের নার্স অরুণা শানবাগের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা। 

    অরুণা ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে নার্স হিসেবে যোগ দেন ১৯৬৭ সালে। তখন তাঁর বয়স ২৫ বছর। ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক ডাঃ সন্দীপ সরদেশাইয়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়। চার হাত এক হওয়ার কথা ছিল ১৯৭৪ সালের গোড়ায়। কিন্তু, ১৯৭৩ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে তাঁর জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। ওয়ার্ড কর্মী সোহনলাল ভরতা বাল্মীকি তাঁকে যৌন নিগ্রহ করে। তারপর শিকল দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুনের চেষ্টা করে। সেই যাত্রায় অরুণা প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু, মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় বাকি জীবন তাঁকে জীবন্মৃত অবস্থাতেই কাটাতে হয়েছিল। দীর্ঘ ৪২ বছর অরুণা ওভাবেই ছিলেন। শেষপর্যন্ত, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২০১৫ সালের ১৮ মে তাঁর মৃত্যু হয়। সাংবাদিক পিঙ্কি ভিরানির বই, ‘অরুণাজ স্টোরি’-তে এই হামলার নেপথ্য কারণ তুলে ধরা হয়েছে। জানা যায়, হাসপাতালে বিভিন্ন ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কুকুরদের বরাদ্দ খাবার চুরির অভিযোগ উঠেছিল সোহনলালের বিরুদ্ধে। অভিযোগের আঙুল তোলেন অরুণাই। তিনি হুমকি দিয়েছিলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কানে কথাটা তুলবেন। এই রাগ মেটাতেই অরুণাকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করে সোহনলাল। দীর্ঘ চার দশক জীবন্মৃত অবস্থায় বেঁচে ছিলেন অরুণা। কেইএম হাসপাতালের সহকর্মীরাই শয্যাশায়ী অরুণাকে রোজ খাইয়ে দিতেন। 

    ২০১১ সালে অরুণা জাতীয় পর্যায়ে শিরোনাম হন। কারণ, সাংবাদিক পিঙ্কি ভিরানি সুপ্রিম কোর্টে অরুণার স্বেচ্ছা মৃত্যুর (ইউথানেশিয়া) জন্য আবেদন করেন। কিন্তু, ৭ মার্চ দেশের শীর্ষ আদালত সেই আবেদন নাকচ করে দেয়। সেই ঐতিহাসিক রায়ের পিছনে যুক্তি ছিল, অরুণার ‘ব্রেন ডেথ’ হয়নি। তাছাড়া, তিনি কিছু ক্ষেত্রে সাড়াও দিচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টের দৌলতেই  এদিন ফের সামনে এল অরুণার ঘটনা।
  • Link to this news (বর্তমান)