• দু’দিন গাড়ির চাকা একটুও গড়ায়নি, মাথায় হাত অ্যাম্বুলেন্স চালকদের
    বর্তমান | ২১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত কয়েকদিন শহরের স্বাস্থ্য পরিষেবা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। রোগী বা রোগীর আত্মীয় শুধু নয়, রোজগার বন্ধ অ্যাম্বুলেন্স চালকদেরও। আন্দোলন শুরুর পর টুকটাক কাজ চলছিল। কিন্তু এখন এন আর এস মেডিক্যাল কলেজের অ্যাম্বুলেন্স চালকরা দিনভর হাসপাতালেই বসে থাকছেন। গত দু’দিন গাড়ির চাকা একচুলও গড়ায়নি।

    এরকম পরিস্থিতিই চলছে। গোটা হাসপাতাল ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। কেউ সরকারি হাসপাতালের উপর ভরসা করে আসছেন না। তাই ডাক পড়ছে না বিকি-দিবাকরদের মতো চালকদের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এন আর এস মেডিক্যাল কলেজের ভিতরে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে অ্যাম্বুলেন্স। বিকি-দিবাকরদের কাজ নেই। গল্প করছেন। কেউ ফোন হাতে বসে। বিকি রাজ বললেন, ‘ওই দিদি এই হাসপাতালেও আসতেন। খবর শোনার পর, চোখে জল এসে গিয়েছিল। এখনও বলতে গিয়ে গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। আমরা সকলেই আন্দোলনের সঙ্গে আছি। কিন্তু গত দু’দিন ধরে এক টাকাও রোজগার হয়নি।’ প্রায় ২৫ বছর অ্যাম্বুলেন্স চালাচ্ছেন দিবাকর ঘরামি। বললেন, ‘কোনও ফোন আসছে না। অনেকে গাড়ি ভিতরে ঢুকিয়ে চলে গিয়েছেন। আমরা অপেক্ষাতে বসে রয়েছি। পরিষেবা স্বাভাবিক হলে খুব ভালো হয়।’

    অনেকেরই এখন প্রশ্ন, মানুষের শরীর খারাপ তো থেমে নেই। তাহলে তাঁরা যাচ্ছেন কোথায়? দিবাকর বলেন, ‘যাঁদের হাসপাতালে না গেলেই নয়, তাঁরা বেসরকারি জায়গায় যাচ্ছেন। সাধারণত ওঁরা সেইসব হাসপাতালে ফোন করে নেন। সেখান থেকেই অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কাজেই আমরা আর কাজ পাচ্ছি না।’ রাকেশ সিং নামে আর এক চালক বলেন, ‘আগে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার ভাড়া পেতাম। গত দু’দিন তো একেবারেই রোজগার নেই।’ দিবাকর মনে করেন, ডাক্তারদের স্থান ভগবানের পরেই। ওই দিদি হাজার মানুষের জীবন বাঁচাতে পারতেন। তিনিই মারা গেলেন। বলেন, ‘বিচারের আশায় আমরাও আছি। কিন্তু চাইছি আস্তে আস্তে পরিষেবা চালু হোক। অপরাধীরা শাস্তি পাক।’
  • Link to this news (বর্তমান)